ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৩ জুন ২০২৪
  • অন্যান্য

উচ্ছেদ অভিযান থেকে বিরত থাকতে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক
জুন ১৩, ২০২৪ ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ । ১১২ জন

অসহায় হরিজনদের উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে। গত ৪ শত বছর ধরে বসবাসরত হরিজনদের ভ‚মির অধিকার রয়েছে। মার্কেট নির্মাণের উদ্দেশ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ অমানবিকভাবে কলোনীর ঘর-বাড়ী বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিচ্ছে। পুরান ঢাকার বংশালের আগা সাদেক রোডে অবস্থিত মিরনজিল্লা হরিজন কলোনী পরিদর্শনে এসে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত বক্তব্য প্রদান করেন।

পল্লীতে তাৎক্ষণিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানা, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের নেতা কমরেড ডা. হারুন অর রশীদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কমরেড শহিদুল ইসলাম সবুজ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি কমরেড আব্দুল আলী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাসদ নেতা নিখিল দাস, খালেকুজ্জামান লিপন, সিপিবি নেতা মিহির ঘোষ, মঞ্জুর মঈন, তাসমিনা আক্তার সাথী, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা মানস নন্দী, সীমা দত্ত, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের নেতা ইকবাল কবীর প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ৪০০ বছর ধরে হরিজনরা বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনীতে বসবাস করে আসছে। শহর পরিষ্কার রাখতে এবং মানুষদের পরিচ্ছন্ন রাখতে তারা বংশ পরম্পরায় সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এই কলোনী ছাড়া তাদের যাওয়ার কোন জায়গা নেই। তারা সবসময় অবহেলার শিকার হয় এবং অমানবিক পরিবেশে ছোট ১০ ফুট বাই ১০ ফুট ঘরে স্বামী-স্ত্রী, পুত্র-কন্যা-পুত্র বধু নিয়ে গাদাগাদি করে তাদের জীবন যাপন করতে হয়। এদের বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা না করে এই উচ্ছেদ অভিযান কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, হরিজনদের ভ‚মির অধিকার দীর্ঘদিনের দাবি। সেটি তো তারা মানছেই না। উপরন্তু উচ্ছেদ অভিযানে নেমেছে। ইতিমধ্যে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নাম করে হরিজনদের চাকরী না দিয়ে অন্যদের চাকরী ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করছে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাসমূহ। শুধু তাই নয়, আগে যেমন আমৃত্যু কাজ করতে পারতো বর্তামনে চাকরীর সীমা ৫৯ বছর করা হয়েছে। ফলে বহু হরিজনদের চাকরীর ব্যবস্থা নেই। চাকরী থাকুক আর না থাকুক হরিজনদের এই কলোনীতে থাকা ছাড়া বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, এই হরিজনরা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ১১ জন হরিজন নেতা জীবন উৎসর্গ করেছে। মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছরে আজ তারা তাদের বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ হয়ে যাবে, এটি আশা করা যায় না। সিটি কর্পোশেন কর্তৃপক্ষ এদের উচ্ছেদ করে ধনী-লুটেরাদের সুযোগ করে দিচ্ছে বলে মনে করেন বাম জোট নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ বলেন প্রধানমন্ত্রী বলছেন, বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। তার দলের মেয়র হরিজনদের গৃহ থেকে উচ্ছেদ করছে। মানুষ কোনটা বিশ্বাস করবে।
নেতৃবৃন্দ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষকে মিরনজিল্লা হরিজন কলোনীতে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করার দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ হরিজন কলোনীর সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। একই সাথে সকল বাম-প্রগতিশীল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে হরিজনদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।