ঢাকারবিবার , ২৫ আগস্ট ২০২৪
  • অন্যান্য

এবার ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক
আগস্ট ২৫, ২০২৪ ১:১২ অপরাহ্ণ । ২২ জন

ইসরায়েল পর এবার ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন বাংলাদেশীরা। অনলাইন, অফলাইন সকল পর্যায়েই এ বিষয়ে এখন জোর আলোচনা। বেছে বেছে ভারতীয় পণ্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বাংলাদেশের নাগরিকরা। ঘটনার শুরুটা চলমান বন্যাকে কেন্দ্র করে। দেশের উত্তর-পূর্ব, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের ১১টি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। সরকারি হিসেবে ৮০ লাখের বেশি মানুষ এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ। নতুন করেও ক্ষতির শিকার হচ্ছেন অনেকেই।

এদিকে পানি বেড়ে যাওয়ায় কাপ্তাই লেকের ১৬টি গেট রাতে খুলে দেওয়া হবে। তাতে চট্টগ্রামের কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হতে পারে। খুলনায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় সেখানেও কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আর পানি নেমে যাওয়ার সময় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবে। দেশের বিপুল সংখ্যক বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাধারণ মানুষ। এরইমধ্যে বন্যা দূর্গত এলাকায় খাবার, পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে পৌঁছেছেন হাজার হাজার মানুষ। দূর্গত মানুষের পাশে সম্মিলিত এই অবস্থায় বাংলাদেশে নতুন নজির স্থাপন করেছে।

তবে দূর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি আকষ্মিক বন্যার জন্য ভারতকে দোষারোপ করছেন সাধারণ মানুষ। বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের দাবি, রাজনৈতিক কারণে একের পর এক বাঁধ খুলে দিয়েছে ভারত। এ বিষয়ে জোর আলোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মোহাম্মদ সিহাব মোল্লা নামে এক ব্যক্তি তার ফেসবুকে একাউন্টে করা এক পোস্টে লিখেছেন, ‘সকল ধরণের ভারতীয় পণ্য বয়কট করুন। ভারতকে সব ভাবে বর্জন করুন। আমাদের অগ্রযাত্রার পথে বাঁধা একমাত্র এই দেশ।’

লাবু রহমান নামে এক ব্যক্তি তার পোস্টে লিখেছেন, ‘এতদিন যারা ভারতীয় পণ্য বয়কট কে হাসাহাসি করতেন, এবার করবেন তো? কেনো করবেন, অন্তঃত বন্যার্তদের কথা ভেবে করবেন।’

মোবারক এম নামে একজন তার এক পোস্টে ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘ভারতীয় পণ্য বয়কট করুন, যারা পানি দিয়ে মানুষ ডুবিয়ে মারতে পারে তারা খাবার বা অন্য কোন পণ্যের সাথে বিষাক্ত বস্তু দিয়েও ক্ষতি করতে পারে।’

মো. মাসুম মিয়া নামে এক ব্যক্তি লেখেছেন, ‘কোকা-কোলার চাইতেও আরো বেশি ভয়ংকর ভাবে ভারতীয় পণ্য বয়কট করা হবে ইনশাআল্লাহ্।’

এদিকে ভারতীয় পণ্য বয়কট, ভারত সফর বয়কটসহ দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিহিংসা পরায়ন রাষ্ট্রটির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে দেখা যাচ্ছে নেটিজেনদের। এরইমধ্যে ইন্ডিয়া আউট নামে একটি হ্যাসট্যাগও খোলা হয়েছে। যা বর্তমানে বহুল ব্যবহার হচ্ছে।

এদিকে এই বয়কট শুধু অনলাইনেই সীমাবদ্ধ নেই। প্রভাব পড়েছে বাজারেও। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের প্রসাধণী পন্য বিক্রেতা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমার দোকানে যা মাল আছে, তার ৮০ ভাগ ইন্ডিয়ার। আমি ইমপ্রোটারের থেকে নেই, আবার নিজে গিয়েও নিয়ে আসি। বন্যা শুরুর পর থেকে ইন্ডিয়ান মালামাল বিক্রি হচ্ছে না। খুব সামান্য সংখ্যক কাস্টমার ইন্ডিয়ান জিনিস চাচ্ছে। আমি নিজেও সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ইন্ডিয়ান জিনিস আর বিক্রি করবো না। যা আছে এই পর্যন্তই শেষ।’

একই তথ্য জানিয়েছে মুদি ব্যবসায়ী ফরহাদ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ভারতীয় অনেক পণ্য বাংলাদেশে চলে। বাংলাদেশ ও ভারতে একই কোম্পানি পন্য দেয়। সেগুলো বিক্রি কমে গেছে। আমরাও ইন্ডিয়ান কোম্পানির পণ্য আর রাখবো না। যারা আমাদের দেশের এত বড় ক্ষতি করেছে। তাদের জিনিস বিক্রি করে লাভ করার ইচ্ছা আমাদের নাই।’

বয়কটের প্রভাব পড়েছে ভারতীয় পেঁয়াজ, আদা, জিরা, ভারতীয় বাসমতি চালসহ বিভিন্ন পণ্যে।