বিশুদ্ধ বায়ু ও পরিবেশে শ্বাস নেওয়ার অধিকার একটি সাংবিধানিক অধিকার এবং এটি একটি মানবাধিকার। অথচ সাংবিধানিক অধিকার হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের জনগণ বিশুদ্ধ বাতাসে নিশ্বাস গ্রহনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আজ রোববার বিকেল ৪টায় ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) এর মিটিং রুমে এ আলোচনা সভায় তারা এসব কথা বলেন।
ঢাকা শহরের বায়ুর মান উন্নয়নে করণীয় শীর্ষক এ আলোচনা সভাটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে সেন্টার ফর ল’ এন্ড পলিসি এফেয়ার্স-সিএলপিএ, Open Sesame এবং Japan Fund For Global Environment (JFGE)।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বায়ু দূষণ বর্তমানে ঢাকা শহরের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২৩ সালের ০৯ মে তারিখের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে বায়ুদূষণে ঢাকা শহরের অবস্থান ছিল তৃতীয়। বিশ্বের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের ২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশ হিসাবে এক নম্বর হয়েছে বাংলাদেশ। যা ঢাকা তথা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক।
তারা আরও বলেন, বর্তমান সময়ে পরিবেশগত স্বাস্ত্যঝুঁকির অন্যতম হলো বায়ুদূষণ। বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয় এবং বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ২ লক্ষ্য ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। অসংক্রামকরোগের রিস্ক ফেক্টর অতীতে ৪টি যথাক্রমে অস্বাস্থ্য খাদ্যভাসা, অপযাপ্ত কায়িক পরিশ্রম, পরিবেশ দূষণ, মাদক ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার বলা হলেও বতমানে নতুন করে যুক্ত করা হচ্ছে বায়ুদূষণকে।
অসংক্রামক রোগ হলো ডায়াবেটিস, COPD, হূদরোগ,স্ট্রোক, ক্যান্সারের প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভয়াবহ এসব রোগের কারনে তাৎক্ষনিকভাবে মানুষের মৃত্যু না হলেও শারীরিক, মানসিক ও অথনৈতকিভাবে ভোগান্তির শিকার হতে হয় বলেও আলোচনা সভায় উঠে এসেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্ব জুড়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম সবচেয়ে বড় হুমকি হল বায়ু দূষণ। বায়ুদূষণের ফলে বাড়ছে ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং নানাধরনের শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত গুরুতর রোগের ঝুঁকি। প্রভাব পড়ছে মানুষের প্রজনন স্বাস্থ্যের উপর , বিরূপ প্রভাব পড়ছে মানুষে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর । এখনই বায়ুদূষণ প্রতিরোধে উদ্যেগ গ্রহণ না করলে অদুর ভবিষ্যতে জনস্বাস্থ্য, অথনীতি তথা দেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় প্রধান, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ডিন, বিজ্ঞান অনুষদ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, এবং প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার, সেন্টার ফর ল’ এন্ড পলিসি এফেয়ার্স-সিএলপিএ এর সেক্রেটারি সৈয়দ মাহবুবুল আলম, আইপিএইচআরসি’র নির্বাহী পরিচালক সুশান্ত সিনহা, এডভোকেট শাহনেওয়াজ বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, ব্যারিস্টার নিশাত মাহমুদ, সহযোগী অধ্যাপক মো: বজলুর রহমান, ব্যাবসায় প্রশাসন বিভাগ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ), সেন্টার ফর ল’ এন্ড পলিসি এফেয়ার্স-সিএলপি এ এর রিসার্চ কনসালটেন্ট আ ফ ম সারওয়ার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব ইকনমিক রিসার্চ এর হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, সেন্টার ফর ল’ এন্ড পলিসি এফেয়ার্স-সিএলপিএ এর পলিসি এনালিস্ট কামরুন্নিছা মুন্না, ডাস এর পলিসি এনালিস্ট মো: আশরার হাবিব নিপু, প্রোজেক্ট ম্যানেজার, ফারহানা জামান লিজা, গবেষণা সেল, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ), ডেইলি বাংলাদেশ পোস্টের সিনিয়র রিপোর্টার এহছানুল হক জসিম।