ঢাকাশনিবার , ২৩ মার্চ ২০২৪
  • অন্যান্য

জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম সংকট সুপেয় পানি : প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ২৩, ২০২৪ ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ । ১২২ জন

বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেসব সংকট বাড়ছে তার অন্যতম সুপেয় ও ব্যবহারযোগ্য পানি বলেছেন, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। গত (২২ মার্চ ২০২৪) শুক্রবার রাজধানীর পানি ভবনের হলরুমে ‘বিশ্ব পানি দিবস-২০২৪’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন

তিনি বলেন, ‘জলবায়ুর পরিবর্তন শুধুমাত্র প্রাকৃতিক কারণেই নয়, এর মধ্যে মানবসৃষ্ট কারণও সামিল। ব্যক্তি পর্যায় হতে বৈশ্বিক পর্যায়ে শান্তি-সম্প্রীতি স্থাপনের এক অনন্য হাতিয়ার পানি। ভূ-উপরস্থ ও ভু-গর্ভস্থ পানির গুনগত মান বজায় রাখা, জলাধারের পানি প্রবাহ অটুট রাখা, পানির বিজ্ঞান ভিত্তিক ব্যবহার ও সামাজিকভাবে পানি সংরক্ষণ এবং পানির অপচয়রোধে সচেতনতার প্রসার সামগ্রিকভাবে বৈশ্বিক-আঞ্চলিক-জাতীয় উন্নয়ন কার্যক্রমকে ত্বরান্বিতকরণে ভূমিকা রাখবে।’

‘শান্তির জন্য পানি’ প্রতিপাদ্যের আলোকে দিবসের শুরুতে বর্নাঢ্য র‌্যালি পানি ভবন থেকে সার্ক ফোয়ারা প্রদক্ষিণ করে। আলোচনা শেষে অনলাইন স্মরনিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ : উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ স্লোগানের আলোকে পানি খাতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ বাস্তবায়নের সকলকেই সচেষ্ট হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ও মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করে যাচ্ছেন। তার হাত ধরে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ নিশ্চিত করতে পানি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পানি সংবেদনশীল টেকসই উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। ‘স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় সকলকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রকল্প গ্রহণ, বাস্তবায়ন ও মনিটরিং ধাপে নাগরিককেন্দ্রিক, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থাপনা বজায় রাখাতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে আন্তরিক হওয়া দরকার। যথাযথ দায়িত্ব পালন করলে কোনো কাজই বাধা নয়।
জাহিদ ফারুক বলেন, নদীর পানি প্রবাহ বজায় রাখা, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর সংরক্ষণ, পানি দূষণ প্রতিরোধসহ সব ক্ষেত্রে কার্যক্রম অব্যহত রাখতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়ন, জাতীয় উন্নয়নের সঙ্গে সংগতিপূর্ণভাবে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ এর লক্ষ্য পূরণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ও আগামী প্রজন্মের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ডেল্টা প্ল্যান দিয়েছেন।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা, দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা এবং পানিসম্পদ রক্ষায় সরকার গৃহীত নীতি ও পরিকল্পনা, আইনের প্রয়োগ, যথাযথ বাস্তবায়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলা, জলাধারে শিল্পবর্জ্য নিক্ষেপ বন্ধকরা; আইনসংগতভাবে বিভিন্ন নগরে জলাভূমি সংরক্ষণ, পুনরুদ্ধার ও সুরক্ষা গুরুত্ব সহকারে করতে হবে। ভুমি পুনরুদ্ধার ও সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।

অবৈধ বালি উত্তোলনের বিষয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা; বাঁধের উপর অবৈধ স্থাপনা স্থাপনের পূর্বেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ; ব্যয়বহুল স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ রক্ষা করার ক্ষেত্রে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ; জেলা,উপজেলা ও ইউনিয়ন সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটিসমূহকে অধিকতর কার্যকর করতে নির্দেশনা দেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাপাউবো এর মহাপরিচালক মুহাম্মদ আমিরুল হক ভূঞা। আলোচনা করেন পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী ও সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) এর নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা আবদুল্লাহ খান। দিবসের প্রতিপদ্যের ওপর আলোচনা করেন ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং এর নির্বাহী পরিচালক মো. জহিরুল হক খান।