বি-স্ক্যান প্রতিবন্ধী নারীদের দ্বারা পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংগঠন হিসেবে একীভূত শিক্ষা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব যাতায়াত ও সর্বজনীন প্রবেশগম্যতাসহ নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সাথে জনওকালতিমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে। দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, জাতীয় জাদুঘর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি গণস্থাপনায় প্রবেশগম্যতা নিশ্চিতে জনওকালতিমূলক কার্যক্রম বি-স্ক্যান এর অন্যতম সাফল্য। এছাড়া প্রতিবন্ধী নারীসহ সব ধরণের প্রতিবন্ধী মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী এবং আত্মমর্যাদার সাথে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে কর্মসংস্থানে শিক্ষানবীশ হিসেবে প্রশিক্ষণ, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ এবং সুদমুক্ত ঋণ প্রদানসহ নানাবিধ কার্যক্রমের মাধ্যমে কর্মসংস্থানে সহায়তা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী মানুষদের স্বাধীন চলাচলের জন্য সহায়ক উপকরণ সহজলতা নয়। অনেক ক্ষেত্রে তা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় এবং অনেক টাকা মাসুল দিতে হচ্ছে। বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধী মানুষদের বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক। ইতোমধ্যে প্রতিবন্ধী মানুষদের জীবন-যাপন সহজাতর করতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ৫% প্রতিবন্ধী ব্যক্তি নিয়োগে ৩% কর রেয়াত, হুইলচেয়ারসহ শ্রবণযন্ত্রের ব্যাটারি আমদানির ক্ষেত্রে কর রেয়াত সুবিধা প্রদান উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশে কর কাঠামোকে আরো বেশি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব করতে প্রতিবন্ধী মানুষের স্বার্থ সুরক্ষা, স্বাধীন ও মর্যাদাকর জীবন-যাপন এবং সংগঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর আরো জোরালো ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।
নিম্নে প্রতিবন্ধী মানুষের বিভিন্ন বিষয়ে কর মওকুফের সুপারিশসমূহ আপনার বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করা হলো–
১। ২০২৪-২৫ জাতীয় বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাতা প্রতিবন্ধিতার মাত্রার ভিত্তিতে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ করতে তামাক ও তামাকজাত পন্যের উপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা।
২। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির করমুক্ত আয় সীমা ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৬ লক্ষ টাকায় উন্নীত করা।
৩। প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের জন্য পূর্বে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা ভাতা করছাড়ের সুযোগটি প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের অতিরিক্ত চিকিৎসা ব্যয় বহনের অংশে হিসেবে পূনর্বহাল করা।
৪। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য লিফটসহ বাড়ীতে থাকার প্রযোজন হয় সেটি বিবেচনা করে বাসস্থানের জন্যও বাড়ি ভাতা ৬ লক্ষ টাকা বা ৫০০০০ টাকা ভাড়া পর্যন্ত করছাড়ের বিধান করা।
৫। প্রতিবন্ধী উদ্যোক্তাদের নারী উদ্যোক্তাদের মতো ৭০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় কর ছাড়ের সুবিধা প্রদান করা।
৬। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান (যে সকল প্রতিষ্ঠানে ২০০ বেশি কর্মী রয়েছে) এর কাছ থেকে ২% প্রতিবন্ধী কর্মী নিয়োগ না দিলে তাদের দায় থেকে শূন্য কোটার অর্থ দিয়ে প্রতিবন্ধী বেকার বীমা তহবিল গঠন করে, ২০২৪-২৫ বাজেটে কর্মক্ষম প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের মাসিক ৮ হাজার টাকা (সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত) করে ৫০ হাজার প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিকে বেকারবীমা প্রদান করা
৭। প্রতিবন্ধী মানুষদের সঞ্চয়কে উৎসাহিত করতে তাদের সঞ্চয়পত্র, এফডিআর, ডিপিএস-এর উপর ভ্যাট, কর ও সার্চ চার্জ সম্পন্ন প্রত্যাহার করা
৮। লিফট বা তার কাঁচামালকে বিলাসী পণ্য হিসেবে না দেখে একটি অতি জরুরী পণ্য হিসেবে তার সফল আমদানি শুল্ক বা সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা।
৯। গণপরিবহণ হিসেবে প্রবেশগম্য গাড়ি আমদানি উৎসাহিত করতে করের ক্ষেত্রে ৫০% থেকে ১০০% আমদানি কর মওকুফ করা।
১০। প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের স্বাধীন ও বাধাহিন চলাচল নিশ্চিত করতে কর ও শুল্ক মুক্ত গাড়ী আমদানি করার সুযোগ প্রদান করা।
১১। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিগত ব্যাবহারের জন্য হুইলচেয়ারসহ বিভিন্ন উপকরন আমদানির ক্ষেত্রে কর মওকুফের বিধানসমূহ হয়রানি মুক্তভাবে উপভোগের জন্য সুনিদিষ্ট বিধিমালা প্রণয়ন করা।
এনবিআরের সাথে প্রাক বাজেট আলোচনায় এসব দাবি জানান প্রতিবন্ধীদের অধিকার আদায়ে বিভিন্ন সংগঠন