ঢাকামঙ্গলবার , ১৭ অক্টোবর ২০২৩

ডেঙ্গু রোধে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ পর্যাপ্ত নয় : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ১৭, ২০২৩ ২:৪৫ অপরাহ্ণ । ১৮৬ জন

ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশা নিধনে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপগুলো পর্যাপ্ত নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে বাংলাদেশে এমআরসিপি (ইউকে) পার্ট-টু ক্লিনিক্যাল (পিএসিইএস) পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে পরীক্ষাকেন্দ্র স্থাপনবিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

এখনও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। প্রতিদিনই মানুষ মারা যাচ্ছে, আক্রান্ত হচ্ছে। কারও অবহেলা নাকি অন্য কোনো কারণে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না, জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই প্রশ্নটা পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনকে করলে সেটা যুক্তিসঙ্গত হতো। এখানে অবহেলা থাকলে…যারা মশা নিধন করে, যারা ময়লা সাফ করে, যারা ড্রেন সাফ করে, যারা ময়লা গাড়িতে নিয়ে যায়, সেটা তাদের দায়িত্ব। স্বাস্থ্য বিভাগের এটা দায়িত্ব নয়। এ ধরনের প্রশ্ন স্বাস্থ্যবিভাগকে করবেন না।’

তিনি বলেন, আমাদেরকে প্রশ্ন করবেন, চিকিৎসার কী ব্যবস্থা নিলেন আপনারা। চিকিৎসায় কোনো ঘাটতি আছে কি না। চিকিৎসার বিষয়ে বলতে পারি এখানে কোনো ঘাটতি নেই।

ডেঙ্গুর চিকিৎসার বিষয়ে ডাক্তার ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের যথেষ্ট পরিমাণে বেড আছে। শুধু ঢাকায় নয় সব জেলায় আমরা আলাদাভাবে বেড তৈরি করেছি। উপজেলায়ও আমরা আলাদাভাবে বেড তৈরি করেছি।

মন্ত্রী বলেন, সব জায়গায় যাতে যথেষ্ট পরিমাণে ফ্লুইড বা স্যালাইন থাকে সেই ব্যবস্থা করেছি। নিজেরাও স্যালাইন আমদানি করেছি, প্রাইভেট সেক্টরকেও আমদানি করার অনুমোদন আমরা দিয়েছি। যাতে স্যালাইনের ঘাটতি না হয়। প্রাইভেটরাও এখন প্রায় ৫০ লাখ স্যালাইন তৈরি করে। এখন আর স্যালাইনের কোন ঘাটতি নেই।

ডেঙ্গু আক্রান্তদের সময় মতো পরীক্ষা করার অনুরোধ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্তরা তাড়াতাড়ি হাসপাতালে আসলে, চিকিৎসা নিলে ভালো হয়ে যাবে। দেরি করে আসলে তখন অনেক সময় করার কিছু থাকে না।

জাহিদ মালেক বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আমাদের মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে একটা লম্বা পরিকল্পনা, সারা বছরের পরিকল্পনা পৌরসভা ও সিটি মেয়রদের নিতে হবে।

নিজের নির্বাচনী এলাকা মানিকগঞ্জে গিয়ে হাসপাতালে ৫০০ ডেঙ্গু রোগী দেখেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আগে পাঁচটা রোগী ছিল না, এখন ৫০০ রোগী কোথা থেকে এলো। সারা জেলা থেকে, আশেপাশের জেলা থেকে এটা এসেছে। সেখানে ডেঙ্গু ছড়িয়েছে সেখানে ড্রেন আছে, পানি ওখানে জমে আছে, ময়লা পড়ে আছে; এগুলো যদি সাফ করা না হয়, স্প্রে যদি না করে, ওষুধ যদি ব্যবহার না করে, তাহলে তো ডেঙ্গু কমবে না।

খালি আমরা বড় বড় কথা বললে তো আর ডেঙ্গু কমবে না। ডেঙ্গুর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যে পদক্ষেপগুলো আমরা দেখছি এখন তা পর্যাপ্ত নয়। এটা সত্যি কথা এটা পর্যাপ্ত নয়। যদি পর্যাপ্তই থাকতো তাহলে… এখন পর্যন্ত আমাদের আড়াই লাখ লোক আক্রান্ত হয়েছে, এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার একশো লোক মৃত্যুবরণ করেছে। এটা তো একটা অনেক বড় সংখ্যা। আমরা খুবই দুঃখিত।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যে পরামর্শ দেওয়ার সেটা আমরা দিচ্ছি। চিকিৎসা যেটা দেওয়ার সেটা দিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, যেখানে গিয়ে বলা দরকার পদক্ষেপ নেওয়া দরকার আমাদের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সেখানে গিয়ে বলবেন। তারা (স্থানীয় সরকার বিভাগ) বাৎসরিক কী পরিকল্পনা করেছে, এখন সারা বছরের পরিকল্পনা দরকার। শুধু ঢাকায় নয় সারাদেশে পরিকল্পনা দরকার। তবেই ডেঙ্গু কমবে, তাছাড়া ডেঙ্গু কমবে না।