ঢাকাসোমবার , ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • অন্যান্য

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন ও কঠোর বাস্তবায়ন জরুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫ ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ । ৭৪ জন

‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে একটি বড় বাধা হিসেবে কাজ করে তামাক, তাই ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন ও কঠোর বাস্তবায়ন জরুরী জানিয়েছেন স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আকরাম হোসেন ’।

রবিবার সকালে (২৩ ফেব্রুয়ারী’২৫) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে-(ডিআরইউ) ঢাকা আহছানিয়া মিশন আয়োজিত ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে সাফল্যের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা, আইনের কঠোর প্রয়োগ ও শেয়ারহোল্ডিং সংস্কার জরুরি। পাশাপাশি, সরকারি কর্মকর্তাদের তামাক শিল্পের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট নীতি জোরদার করতে হবে। এবং তামাক কর বৃদ্ধি, প্লেইন প্যাকেজিং বাস্তবায়ন ও তরুণদের সচেতনতা কার্যক্রম ত্বরান্বিত করুন।

ঢাকা আহছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান মিলন এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ইনকিলাবের জেষ্ঠ্য সাংবাদিক মাইনুল হাসান সোহেল।
মূল প্রবন্ধে তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে ১৫ বছর ও তদুর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৩৫.৩ শতাংশ। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে, পঙ্গুত্ববরণ করে বছরে প্রায় ৪ লাখ মানুষ, পরোক্ষ ধূমপানে শিকার ৪২.৭ শতাংশ। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির ২০১৯ সালে প্রকাশিত গবেষণা ফলাফল অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা একইসময়ে এই খাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের (২২ হাজার ৮১০ কোটি) চেয়ে অনেক বেশি।

মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, বাংলাদেশে তামাকের ব্যবহার জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতি এবং পরিবেশের জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে হুমকি সৃষ্টি করছে। তাই বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩) যুগোপযোগী করতে হবে।

মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, তামাকপণ্যের প্রচার ও বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ হলেও কার্যকর ভাবে বাস্তবায়নের অভাবে তামাক কোম্পানির কূটকৌশল ও চটকদার বিজ্ঞাপনের ফলে, তামাকের প্রতি আসক্ত হচ্ছে দেশের তরুণরা। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের উচিত তামাক কোম্পানির ছোবল থেকে তরুণদের সুরক্ষা প্রদান করা ।

সভাপতির বক্তব্যে ইকবাল মাসুদ বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাসের মাধ্যমে ধুমপানের নির্ধারিত এলাকা বিলুপ্ত, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ, খুচরা বিড়ি-সিগারেট বিক্রি বন্ধ, ই-সিগারেট বা হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট থেকে তরুণদের রক্ষা করা, তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম বন্ধ ও সিগারেটের প্যাকেটে সতর্কবার্তা ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ বাড়ানো হলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভূমিকা রাখবে।