ঢাকাবুধবার , ১৬ আগস্ট ২০২৩
  • অন্যান্য

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী পাশের দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
আগস্ট ১৬, ২০২৩ ২:৩০ অপরাহ্ণ । ১৮৫ জন

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী চলতি সংসদ অধিবেশনে পাশের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বেসরকারি এনজিও নারী মৈত্রী। আজ বুধবার (১৬ আগস্ট) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সামনে আয়োজিত মানবন্ধনে সংস্থাটির তৃণমূল পর্যায়ের নারী নেত্রীরা এ মানববন্ধন করেন।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন নারী মৈত্রীর প্রকল্প সমম্বয়কারী নাসরিন আক্তার, এডভোকেসি অফিসার আলফি শাহরীন,মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন অফিসার ফাহিমা তুজ জোহরাসহ অন্যান্যরা।

মানববন্ধনে জানানো হয়, টোব্যাকো এটলাস ২০১৮ এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতিবছর প্রায় ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ অকাল মৃত্যুবরণ করেন। সে হিসেবে প্রতিদিন ৪৪২ টি প্রাণ অকালে ঝরে যাচ্ছে তামাকের কারণে। শুধু তাই নয়, তামাকের ধোয়াঁয় রয়েছে ৭,০০০টি রাসায়নিক পদার্থ, এর মধ্যে ৭০টি পদার্থ ক্যানসার সৃষ্টিকারী। ফুসফুস, ক্যানসার, স্ট্রোক ও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ পরোক্ষ ধূমপান।

গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে গ্যাটস-২০১৭ এর তথ্য অনুযায়ী,বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। তাদের মধ্যে ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারকারী ২ কোটি ২ লাখ এবং ধূমপায়ী ১ কোটি ৯২ লাখ। আর পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ।

নারী নেত্রীরা জানান,তামাকের কারণে অসংক্রামক রোগ যেমন- হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, দীর্ঘমেয়াদী শ্বাসরোগ, ক্যান্সার, কিডনি রোগ এবং আঘাতজনিত রোগ ক্রমেই বাড়ছে। আর নারী ও শিশুরা পরোক্ষ ধূমপানের কারণে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পরোক্ষ ধূমপানের নারীদের অকালে গর্ভপাত, অপরিণত শিশুর জন্ম, স্বল্প ওজনের শিশু, গর্ভকালীন রক্তক্ষরণ, প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, মৃত শিশুর জন্ম দেয়াসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করতে তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটির সংশোধনী এখনই পাশ করতে হবে।

মানববন্ধনে নারী নেত্রীরা বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের ৬ টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। সেগুলো হলো- যেখানে সকল পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রর্দশন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির যেকোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০% থেকে বাড়িয়ে ৯০% করা; বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা এবং ই-সিগারেটসহ সকল ইমার্জিং ট্যোব্যাকো প্রোডাক্টস্ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা।

নারী মৈত্রীর প্রকল্প সমম্বয়কারী নাসরিন আক্তার জানান, ধূমপান শুধু যে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে তা নয়, এটি আর্থিক ক্ষতিরও অন্যতম কারণ। বর্তমানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটির সংশোধনীর খসড়া এখন মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এই আইন যত শীঘ্র পাশ হবে, তত দ্রুত মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব হবে।