ঢাকাশনিবার , ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • অন্যান্য

আজকের সর্বশেষ সবখবর

নাটক, সিনেমায় ধূমপানের দৃশ্য বন্ধের আহ্বান শিশু-কিশোরদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪ ১০:৪৩ অপরাহ্ণ । ৮৪ জন

নাটক, চলচ্চিত্র, ওয়েবসিরিজে জনপ্রিয় শিল্পীদের হাতে সিগারেট ও ধূমপানের দৃশ্য কিশোর-তরুণদেরকে ধূমপানে প্ররোচিত করছে। যা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘণের সাথে সাথে তরুণদের বিপথগামী পরিস্থিতি ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আগামী দিনে নাগরিকদের সুস্থতা ও কর্মক্ষমতা নিশ্চিতে আজকের কিশোর-তরুণদের ধূমপানসহ সকল ক্ষতিকর নেশা থেকে বিরত রাখা প্রয়োজন।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ বিকাল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি রাজু ভাস্কর্যের সামনে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) ও প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন এর আয়োজনে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত লিফলেট ক্যাম্পেইন এবং অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। এতে প্রায় অর্ধশত শিশু-কিশোর ও তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন মানস এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী, প্রত্যাশা’র সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, ডাস এর টিম লিড আমিনুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।

ড. অরূপরতন চৌধুরী বলেন, সিগারেট কোম্পানিগুলোর কৌশলী বিজ্ঞাপন, প্রচারণা এবং অপতৎপরতার কারণে কিশোর-তরুণরা বিপথগামী হচ্ছে। ধূমপানের দৃশ্য না থাকলে চলচ্চিত্র ব্যবসা সফল হবে না, এ ভ্রান্ত ধারনা থেকে নির্মাতা, শিল্পী- কলাকুশলী, প্রযোজক, পরিচালক সকলকে বেরিয়ে আসতে হবে। রাষ্ট্রীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নির্মাতা, শিল্পী ও কলা-কূশলীদেরকে চলচ্চিত্র নির্মাণে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন। পাশাপাশি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

হেলাল আহমেদ বলেন, ধূমপান ও মাদকের ছোবলে কিশোর-তরুণদের বিপথগামীতা বর্তমান সময়ের বড় উদ্বেগ। কিশোর গ্যাঙ এবং সামাজিক অপরাধে তরুণদের সম্পৃক্ততা শুভ ইঙ্গিত নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তরুণদের সুরক্ষায় ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন এবং মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। সেটার কার্যকর বাস্তবায়ন করা হোক।

বক্তারা আরো বলেন, বিশে^ প্রতিবছর ৮৭ লক্ষ মানুষের মৃত্যু ঘটে তামাকের কারণে! পরোক্ষ ধূমপানে মারা যায় ১৩ লক্ষাধিক মানুষ, যা সড়ক দুর্ঘটনা, এইচআইভি এইডস, সন্ত্রাসসহ আরো বিভিন্ন কারণে পৃথিবীতে সম্মিলিত মৃত্যুর মোট যোগফলের চাইতে বেশি! বাংলাদেশে বিগত ৪ বছরে করোনায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করছেন। অথচ, তামাকজনিত রোগে প্রতিবছর ১ লক্ষ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়! বাড়িতে, পাবলিক প্লেস-পরিবহন, কর্মস্থলে আক্রান্ত হয় প্রায় ৮ কোটি মানুষ পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বাংলাদেশে উঠতি বয়সী (১৩-১৫ বছর বয়সী) ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে তামাক ব্যবহার করে ৯ দশমিক ২ শতাংশ। এদের উল্লেখযোগ্য অংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। এ সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে। করোনার চাইতে বড়, নীরব মহামারী হলো ‘তামাক’। কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যতীত তামাকের ছোবল থেকে জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ, অর্থনীতি কোন কিছুরই রক্ষা নেই। এজন্য নাটক, চলচ্চিত্র এবং নতুন মিডিয়ায় প্রচারিত কন্টেন্টগুলোতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন এবং এ সংক্রান্ত একটি গাইডলাইন প্রণয়নের দাবী জানানো হয় কর্মসূচি থেকে।

কর্মসূচিতে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, নাটাব, প্রত্যাশা’র প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।