ঢাকাসোমবার , ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • অন্যান্য

পাবলিক পরিবহন ধূমপানমুক্ত করতে বিআরটিএ দ্রুত উদ্যোগ নেবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩ ৫:৪০ অপরাহ্ণ । ৩৮৮ জন

পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানমুক্ত করতে বিআরটিএ নিজস্ব কার্যক্রমের পাশাপাশি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এবং তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বিআরটিএ সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। আজ ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সকাল ১০.০০ টায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)’র আয়োজনে এবং উন্নয়ন সংস্থা ডেভলপমেন্ট এ্যাকটিভিটিস অফ সোসাইটি-ডাস্ এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট-বাটা’র যৌথ সহযোগিতায় বিআরটিএ সম্মেলন কক্ষে গণপরিবহণ ও পাবলিক পরিবহনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের গুরুত্ব ও করণীয় – শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়।

বক্তারা বলেন, দেশে বাড়ীতে ৩৯ % (৪০.৮ মিলিয়ন), কর্মক্ষেত্রে ৪২.৭% (৮.১ মিলিয়ন) এবং পাবলিক পরিবহনে : ৪৪.০% (২৫.০ মিলিয়ন) পরোক্ষ ধূমপানের শিকার)। রাজধানী ঢাকার প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়া ৯৫ শতাংশ শিশুর দেহে উচ্চমাত্রার নিকোটিন পাওয়া গেছে যার মূল কারণ পরোক্ষ ধূমপান। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ এ পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধ, ধূমপান ক্ষেত্রে জরিমানা ৩০০ টাকা এবং পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপানমুক্ত সাইন স্থাপন না করলে জরিমানা ১০০০ টাকা করার বিধান রয়েছে। এ বিধান বাস্তবায়ন করা হলে অনেক মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি হতে রক্ষা পাবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব বলেন, পাবলিক প্লেসে এখন ধূমপান অনেক কমেছে। মানুষ এখন অনেক সচেতন হয়েছে, সচেতনতাই পারে ধূমপানকে নিয়ন্ত্রণ করতে। আগের মতো সেই স্ট্যাটাস আর নাই, আগে ধূমপান করাকে একটা গৌরবের বিষয় মনে করা হতো। ধূমপান করার ফলে মানুষের যে ক্যানসার হয় সেই সব ক্যানসার আক্রান্ত রুগীকে বিভিন্ন সেমিনারে দেখানো উচিত যাতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। যারা এখনও সিগারেট ধরে নাই তাদেরকে আমরা নিরুৎসায়িত করবো যাতে তারা সিগারেট না খায়। বিশেষ করে টুরিষ্ট পুলিশকে বলব মোটর সাইকেলে যে সব ছেলে মেয়েরা ধূমপান করে তাদেরকে আপনারা নিরুৎসায়িত করবেন। আমরা যদি সবাই যার যার অবস্থান থেকে ধূমপানের বিরুদ্ধে কাজ করি তাহলে ২০৪০ সালের অনেক আগেই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণানুযায়ী বাংলাদেশকে ধূমপানমুক্ত করা সম্ভব।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএমইটি’র মহাপরিচালক বলেন, ‘ঘনঘন ধূমপান করে যে জন, কিনে রাখা ভাল তার নিজের কাফন’ নিজের লেখা একটি বইএর দুটি লাইনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরো বলেন ধূমপানের এই জরিমানা বিষয় অনেক আগে থেকে ছিল যেমন ১৮৯০ সালে জরিমানা ছিল ২০ টাকা এবং বাচ্চারা কোন ধূমপান করতে পারবে না। বর্তমানে ৩০০ টাকা জরিমানা , আসলে জরিমানা দিয়ে এই ধূমপানকে বন্ধ করা যাবে না। এনফোর্সমেন্ট সহ বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের যে ফর্ম আছে সেখানে আলাদাভাবে একটা কলাম থাকতে হবে যেখানে ধূমপায়ী এবং অধূমপায়ীদের বিবরণ থাকবে। অধূমপায়ী যারা থাকবে তাদের জন্য এওয়ার্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। ধূমপায়ীদের বেতন থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমান টাকা কর্তন করে সে টাকা অধূমপায়ীদের বেতনে পুরস্কার সরুপ যোগ করে দিতে হবে সেক্ষেত্রে ধূমপায়ীরা ধূমপান ছাড়ার ক্ষেত্রে উৎসাহী হবে। বিআরটিএ লাইসেন্স প্রদানের সময় একটা কলাম রাখবেন যেখানে ধুমপায়ী এবং অধূমপায়ীর সংখ্যা থাকবে, লাইসেন্স প্রদানের সময় এটা বিবেচনায় আনতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান বলেন, পাবলিক পরিবহনে ধূমপান নিয়ন্ত্রণে বিআরটিএ পূর্বের ন্যায় তার কার্যকলাপ বহাল রাখার পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ তারা খুব দ্রুতই গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে তিনি সকলের সহযোগিতামূলক মনোভাব প্রত্যাশা করেন।

বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার,(অতিরিক্ত সচিব) এর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরি, মাননীয় সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো: শহীদুল আলম, এনডিসি (অতিরিক্ত সচিব), মহাপরিচালক, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো ও হোসেন আলী খোন্দকার, (অতিরিক্ত সচিব), সমন্বয়কারী, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। বিআরটিএ’র রোড সেফটি বিভাগের পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রাব্বানী’র সঞ্চালনায় সভায় সভায় ধারণা পত্র উপস্থাপন করেন দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহাবুব আলম তাহিন। সভার শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ডাসের টীম লীড আমিনুল ইসলাম বকুল। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএ’র বিভিন্ন বিভাগের পরিচালক ও উপ-পরিচালকবৃন্দ, বিআরটিসি’র প্রতিনিধিবৃন্দ, সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রতিনিধিবৃন্দ, সায়েদাবাদ-গাবতলী ও মহাখালী বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিবৃন্দ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও টুরিস্ট পুলিশ বিভাগের প্রতিনিধিবৃন্দ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের প্রতিনিধি, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের প্রতিনিধি, মিডিয়ার প্রতিনিধি সহ বিভিন্ন তামাক বিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।