ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৪ অক্টোবর ২০২৪

প্রাকৃতিক বনে আগ্রাসী গাছ লাগানো যাবে না : পরিবেশ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ২৪, ২০২৪ ২:১৩ অপরাহ্ণ । ৪৩ জন

প্রাকৃতিক বনে কোনভাবেই আগ্রাসী ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছ লাগানো যাবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আপনারা যারা বন বিভাগে কাজ করেন, যারা বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করেন, আমাদের সকলকে কাজের গতি বাড়াতে হবে। আমাকে এখানে দায়িত্ব দেয়ায় আপনাদের উপর মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেড়ে গেছে। আমরা কিছু সেকেলে আইন, বিধিমালা ও মানসিকতা নিয়ে কাজ করছি বলেও জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আন্তর্জাতিক মিঠা পানির ডলফিন দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এ কথা বলেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আপনারা যারা বন বিভাগে কাজ করেন, যারা বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করেন, আমাদের সকলকে কাজের গতি বাড়াতে হবে। আমাকে এখানে দায়িত্ব দেয়ায় আপনাদের উপর মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেড়ে গেছে। আমরা কিছু সেকেলে আইন, বিধিমালা ও মানসিকতা নিয়ে কাজ করছি। আমরা মনে করি আমাদের কাজটাই সেরা, সেটাই যদি সেরা হত, তাহলে আমাদের মূল্যায়ন মানুষের কাছে ভিন্ন হত। তাই আমরা প্রথমে ১৯২৭ সালের যে বন আইন আছে, সেটাকে যুগোপযোগী করেছি। ১৯২৭ সালের বন আইন দিয়ে বর্তমান সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের যুগে এসে বাস্তবতা মোকাবিলা সম্ভব নয়।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা বলেন, বন বিভাগকে বনের পরিমাণ বাড়াতে হবে। যে বনে যে প্রজাতির গাছ, সে প্রজাতি দিয়েই বন বাড়াতে হবে। প্রাকৃতিক বনে কোনভাবেই আগ্রাসী ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছ লাগানো যাবে না। এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আজকে ডলফিন নিয়ে যে গবেষণা হল, সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কোনো জায়গাতেই বেইজড লাইন নেই, আজকে যে ফলাফল দেখা যাচ্ছে, পাঁচ বছর পর আবার যখন কোন গবেষণা হবে তখন বোঝা যাবে আমাদের অবস্থান কোথায়। গবেষণায় সংখ্যার থেকে গুরুত্বপূর্ণ জানা যে কোন কোন কারণে আমাদের শুশুক হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা জানি পানি পরিস্কার না থাকলে, সেই পানিতে শুশুক থাকে না।

গবেষণার ফলাফল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১ হাজার ৯০০ কিলোমিটার এলাকায় এ গবেষণা করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, ৬৩৬টি গ্রুপে ১হাজার ৩৫২টি শুশুক পাওয়া গেছে। আমাদেরকে শুশুকের পরিমাণ বাড়াতে হবে। শুশুকের পরিমাণ বাড়া মানে নদীগুলো দূষণমুক্ত হচ্ছে। শুশুক হচ্ছে প্রাকৃতিক টেস্ট প্যারামিটার। শুশুক থাকা মানেই নদী পরিষ্কার আছে, মোটামুটি বসবাস উপযোগী আছে, সেটা বোঝা যায়। এমন প্রাকৃতিক টেস্ট প্যারামিটার আমরা হারিয়ে ফেলতে পারি না। নদী দূষণমুক্ত করার কাজ শুরু করেছি। প্রত্যেক ডিসিকে বলা হয়েছে, তার এলাকার অন্তত একটি নদী দূষণমুক্ত ও দখলমুক্ত করতে কী করা যায়, তার কর্মপরিকল্পনা জমা দিতে।

প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জিল্লুর রহমান।