ঢাকাশুক্রবার , ৭ জুন ২০২৪
  • অন্যান্য

‘বাজেটে ঘাটতি কমিয়ে ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা আরও কম করা যেতো’

নিজস্ব প্রতিবেদক
জুন ৭, ২০২৪ ৪:২৩ অপরাহ্ণ । ১৩০ জন

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান মনে করেন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপির ৪.৫ শতাংশ ঘাটতির যে প্রস্তাবনা রয়েছে তা আরও কমানো যেতো। তার মতে- এই ঘাটতি ৩.৫ শতাংশে রাখা গেলে দেশীয় ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণের পরিমাণ আরও ৫৬ হাজার কোটি টাকা কমানো সম্ভব। ঘাটতি হ্রাসের মাধ্যমে ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা কমানো গেলে তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক হতে পারে বলে জানান তিনি।

আজ (শুক্রবার, ০৭ জুন ২০২৪) ঢাকায় উন্নয়ন সমন্বয় কার্যালয়ের খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ কনফারেন্স কক্ষে বাজেট প্রতিক্রিয়া অধিবেশনে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করার সময় তিনি এ কথা বলেন। ব্যাংক এশিয়া পিএলসি এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত ‘আমাদের সংসদ’ কার্যক্রমের আওতায় এই অধিবেশন আয়োজিত হয়।

প্যানেল আলোচক হিসেবে অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন আর্ক ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. রুমানা হক, ব্যাংকিং খাত বিশেষজ্ঞ ফারুক মইনউদ্দীন, এবং সমাজতাত্ত্বিক খন্দকার সাখাওয়াত আলী। মূল নিবন্ধ উপস্থাপনকালে ড. আতিউর আরও বলেন যে, প্রস্তাবিত বাজেটটিতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও নিজস্ব অর্থনীতির চ্যালেঞ্জগুলোর প্রতি সংবেদনশীলতার পরিচয় দিয়ে অনেকখানি সঙ্কোচনমুখিতা দেখানো হয়েছে, যা প্রশংসনীয়। তবে বিদ্যমান বাস্তবতায় বিশেষত উচ্চ মূল্যস্ফীতির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দের ক্ষেত্রে আরও উদারতা দেখানো যেতো। তা করা গেলে অস্থির আর্থসামাজিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে সামাজিক পিরামিডের পাটাতনে থাকা মানুষদের জন্য আরও সুরক্ষা নিশ্চিত করা যেতো।

বাজেটে সঙ্কোচনের চাপ থাকার পরও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কিছুটা বাড়ানোর উদ্যোগকে বিশেষভাবে স্বাগত জানান ড. রুমানা হক। তবে যেহেতু দেশের মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি নাগরিকদেরই বহন করতে হচ্ছে, তাই বাজেটে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের জন্য চিকিৎসা সামগ্রি বাবদ এবং ডায়াগনোস্টিক টেস্ট বাবদ বরাদ্দ আরও বাড়ানো গেলে জনগণের ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমানো সম্ভব বলে মত দেন তিনি। ফারুক মইনউদ্দীন বলেন যে, রাজস্ব আহরণে বিদ্যমান করাদাতাদের ওপর বাড়তি করের বোঝা চাপানোর চেয়ে নতুন করদাতাদের করের আওতায় নিয় আসাটি বেশি জরুরি ও কার্যকর। বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে মানব সম্পদ উন্নয়নে যে নীতি-মনোযোগ দরকার, বাজেটের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার পরিকল্পনায় তা প্রতিফলিত হচ্ছে না বলে মনে করেন খন্দকার সাখাওয়াত আলি।

অধিবেশনে গণমাধ্যেমের প্রশ্নোত্তর পর্বের শেষে আয়োজকদের পক্ষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ব্যাংক এশিয়া পিএলসি-এর হেড অফ কর্পোারেট অ্যাফেয়ার্স সিদ্দিক ইসলাম।