ঢাকামঙ্গলবার , ২১ মে ২০২৪

ব্যাটারিচালিত যানবাহন ও চালকদের লাইসেন্সসহ ৪ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
মে ২১, ২০২৪ ৫:২৪ অপরাহ্ণ । ৭৩ জন

বিআরটিএ কর্তৃক ব্যাটারিচালিত যানবাহন ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে রিকশা-ভ্যান- ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন।

মঙ্গলবার (২১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘ব্যাটারিচালিত যানবাহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে চলাচলের অনুমতি, শ্রমিক আন্দোলনের বিজয়’ শীর্ষক বিজয় মিছিল ও সমাবেশে এসব দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। সমাবেশটি আয়োজন করে ‘রিকশা -ভ্যান- ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন’।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, রিকশা একটি জৈব জ্বালানীবিহীন পরিবেশবান্ধব বাহন। বাংলাদেশের ৫০ লাখ দরিদ্র পরিবারের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন এই রিকশা। রিকশা কোনও ব্যক্তিগত বাহন নয়। এটি গণপরিবহনেরই একটি অংশ। কিন্তু গত ১৫ মে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঢাকার দুই সিটির মেয়রের উপস্থিতিতে এক সভা পরবর্তী ব্রিফিংয়ে ঢাকা শহরে ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধ করার জন্য মৌখিক ঘোষণা দেন। এরপর ১৬ মে থেকে যাত্রাবাড়ী-বাড্ডা-হাজারীবাগ-কামরাঙ্গীরচর-লালবাগ-খিলগাঁও-মোহাম্মদপুর-পল্লবীসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ দিয়ে রিকশা ও ব্যাটারি জব্দ করা হয়। মন্ত্রীর এমন ঘোষণার পর চাঁদাবাজি আরও বেড়ে গেছে। পরে সোমবার (২০ মে) প্রধানমন্ত্রী ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।

তারা আরও বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি, বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের বর্তমান দুর্দশা নিবারণের জন্য প্রশাসন কার্যকর সিদ্ধান্ত নেবে। দেশের অর্থনীতির সংকটকালীন অবস্থায় চাঁদাবাজ লুটপাটকারী অসৎ কর্মকর্তারা দরিদ্র সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলছে। এমতাবস্থায় ব্যাটারিচালিত যানবাহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের জীবিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এ ধরনের যানবাহকে বিআরটিএ কর্তৃক লাইসেন্স প্রদানের কোনও বিকল্প নেই। একইসঙ্গে কোনও অসাধু চক্র যেন শ্রমিকের কাছ থেকে কার্ড-টোকেন কিংবা অন্য কোনও উপায়ে চাঁদা আদায় করতে না পারে, সেই বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা আবশ্যক।

শ্রমিক নেতারা বলেন, আমরা সরকারের কাছ থেকে বৈধ লাইসেন্স নিয়ে জীবিকা রক্ষা করতে চাই। পাশাপাশি সরকারকে রাজস্ব দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চাই। সারা পৃথিবী যখন বিদ্যুৎচালিত যানবাহনের দিকে ঝুঁকছে, তখন বাংলাদেশেরও সেই দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এই ধরনের যানবাহন বন্ধের মতো পশ্চাৎপদ সিদ্ধান্ত গ্রহণ কোনো মতেই সমীচীন হবে না।

এসময় সংগঠনের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরা হয়। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে:

১. বিআরটিএ কর্তৃক ব্যাটারিচালিত যানবাহন ও চালকদের লাইসেন্স প্রদান করতে হবে। লাইসেন্স প্রদান সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ব্যাটারিচালিত যানবাহন আটক বন্ধে নির্বাহী আদেশ জারি করতে হবে। ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচলে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

২. বিভিন্ন রাস্তায় রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে। বাস্তবসম্মত পরিকল্পনার ভিত্তিতে রাস্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা আধুনিকায়ন ও ব্যাটারিচালিত যানের জন্য র‍্যাকার বিল কমিয়ে যৌক্তিক করতে হবে।

৩. ব্যাটারিচালিত যানবাহন শ্রমিকদের ওপর জুলুম-নির্যাতন-চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। কার্ড-টোকেনের নামে চলমান অবৈধ চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি ও তাদের প্রশ্রয়দাতা পুলিশ-ট্রাফিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।

৪. রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিকদের মানুষ হিসেবে নাগরিক অধিকার ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।

রিকশা-ভ্যান- ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি আব্দুল হাকিম মাইজভান্ডারির সভাপতিত্বে এসময় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন— সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, রিকশা-ভ্যান- ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা কাফি রতন, ডাকসুর সাবেক ভিপি রাগীব আহমেদ মুন্না, রিকশা-ভ্যান- ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক উপদেষ্টা জলি তালুকদার, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাগীন নাঈম প্রমুখ।