ঢাকামঙ্গলবার , ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মমতাকে না জানিয়েই পানি ছাড়লো ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গে বন্যার আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪ ৫:২৬ অপরাহ্ণ । ২৩ জন

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে না জানিয়েই পানি ছাড়া অভিযোগ উঠেছে ঝাড়খণ্ডের দামোদর ভ্যালি করপোরেশনের (ডিভিসি) বিরুদ্ধে ঝাড়খণ্ডের দামোদর ভ্যালি করপোরেশন (ডিভিসি) পানি ছাড়ায় পশ্চিমবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে চিকিৎসকদের সঙ্গে বেঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমন অভিযোগ করেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মঙ্গলবার অনেক পানি ঢুকবে। এত রাতে ৩৫ জনকে উদ্ধার করব কী করে। সকালে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের দল পাঠাবো। চিফ সেক্রেটারি (সিএস) নিজে মনিটরিং করছেন।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মমতা আরও বলেন, খানাকুলে ৩৫ জন আটকে রয়েছে, তা নিয়ে চিন্তায় আছি। হঠাৎ পানি ছেড়েছে ডিভিসি। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সঙ্গে তিনবার কথা বলেছি। জানি না কি হবে। এরই মধ্যে ডিভিসি পানি ছাড়ায় বাঁকুড়া, হাওড়া, বীরভূম,হুগলি, বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা অনেকটাই ক্ষতির মুখে।

কালিঘাটে নিজের বাসভবনের সামনে আদি গঙ্গা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় আশঙ্কা প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি নিজে আদি গঙ্গার সামনে থাকি। আগে কখনো এতটা পানি আসতে দেখিনি। আমরা সিঁড়ি বানিয়ে দিয়েছিলাম। চৌদ্দ-পনেরোটা সিঁড়ি ছিল। একদম পানিতে ভরাট হতে আর মাত্র পাঁচটা-ছয়টা সিঁড়ি বাকি ছিল। এরপর বারণ করা স্বত্ত্বেও যদি পানি ছেড়ে দেয়, তাহলে বন্যা আটকানো যাবে না।

‘ডিভিসি বলছে, পানি না ছাড়লে ওদের ওখানে বন্যা হবে। তোমাদের ওখানে বন্যা হবে বলে তুমি আর একটা রাজ্যকে ভাসাতে পারো না।’

রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে পানি ছাড়ার অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, আমাদেরকে না জানিয়ে সকালে প্রায় ৮০-৯০ হাজার কিউসেক পানি ছেড়ে দিয়েছে ডিভিসি। এমনিতেই তিন-চার দিন লাগাতার বৃষ্টিতে আমাদের নদী ও বাঁধগুলোর পানি উঁপচে পড়ার মতো অবস্থায় রয়েছে। তার মধ্যে, নতুন করে ছাড়া পানি বিকেলে পৌঁছাবে। আমি সবাইকে বলব, সতর্কতা অবলম্বন করে দয়া করে ধীরে ধীরে রিলিফ সেন্টার গুলোতে যান।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, আপনারা সতর্ক থাকুন ও বন্যা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিন। মঙ্গলবার কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পানি ঢুকবে। এই পানির উপর যদি আবার পানি আসে তাহলে বিপদ আরও বাড়বে।

‘স্রোত এতটাই বেশি যে, উদ্ধার করতে লোক পাঠাব, তারও উপায় নেই। উদ্ধারকারী বোটও তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ওখানে এনডিআরএফ ও এফডিআরএফ টিম পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।’ এদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস নেতা-কর্মীদেরও বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের সাহায্য করার করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।

জনগণের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্য বলেন, রাজ্য সরকার সার্বিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। যে কোনো মুহুর্তে পানি ঢুকে যেতে পারে। দোতলা বাড়ি হলেও, যদি একতলা ভেসে যায় তাহলে দোতালা ভাসতে আর কতক্ষণ লাগবে? কাজেই কেউ দয়া করে জীবনের ঝুঁকি নেবেন না। সতর্ক থাকুন, নিজের জীবন বাঁচান। একটা প্রাণের দাম অনেক বেশি।