বর্তমান সরকার দেশের মেরিটাইম সেক্টরকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে ‘ন্যাশনাল মেরিটাইম পোর্ট স্ট্র্যাটেজি’ প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমাদের মেরিটাইম সেক্টরেও আরো বেশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে এবং একটি কার্যকর ও টেকসই বন্দর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার “ন্যাশনাল মেরিটাইম পোর্ট স্ট্র্যাটেজি” প্রণয়ন করবে। এই কৌশলপত্রের মাধ্যমে একটি সমন্বিত, শক্তিশালী ও যুগোপযোগী বন্দর কাঠামো গড়ে তোলা হবে। বন্দর কেন্দ্রিক সকল সেবাকে একটি প্লাটফর্মে আনতে মেরিটাইম সিঙ্গেল উইন্ডো চালু করা হবে। যেখানে ব্যবসায়ীরা স্বল্পতম সময়ের মধ্যে হয়রানিমুক্ত সেবা পাবে।
আজ (৩০ অক্টোবর) বুধবার সকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, বিআইডব্লিউটিসি, বিআইডব্লিউটিএ ও নৌপরিবহন অধিদপ্তরের কার্যক্রমসমূহের অগ্রগতি বিষয়ক পর্যালোচনা সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এ কথা জানান।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মেরিটাইম সেক্টর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বিশেষ করে বন্দরকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি দেশের জিডিপিতে অসামান্য অবদান রেখে চলেছে। কিন্তু, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য গত পঞ্চাশ বছরেও বাংলাদেশে কোনো সমন্বিত বন্দর ব্যবস্থাপনা কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়নি। প্রত্যেকটি বন্দর পৃথক পৃথকভাবে তাদের কার্যক্রম ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকে। তবে উন্নত বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও এখন আধুনিক ও স্মার্ট বন্দর ব্যবস্থাপনা সময়ের দাবি। বিশ্বের বিখ্যাত বন্দরগুলো এখন ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর ফলে সেখানে বেশি বেশি বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মেরিটাইম সেক্টরেও আরো বেশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে এবং একটি কার্যকর ও টেকসই বন্দর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার “ন্যাশনাল মেরিটাইম পোর্ট স্ট্র্যাটেজি” প্রণয়ন করবে। এই কৌশলপত্রের মাধ্যমে একটি সমন্বিত, শক্তিশালী ও যুগোপযোগী বন্দর কাঠামো গড়ে তোলা হবে। বন্দর কেন্দ্রিক সকল সেবাকে একটি প্লাটফর্মে আনতে মেরিটাইম সিঙ্গেল উইন্ডো চালু করা হবে। যেখানে ব্যবসায়ীরা স্বল্পতম সময়ের মধ্যে হয়রানিমুক্ত সেবা পাবে।
এ সময় উপদেষ্টা ‘ন্যাশনাল মেরিটাইম পোর্ট স্ট্র্যাটেজি’ প্রণয়নের মাধ্যমে দেশের মেরিটাইম সেক্টরে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি এ সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠনের নির্দেশনা প্রদান করেন এবং কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি কৌশলপত্র তৈরীপূর্বক জমাদানের নির্দেশনা প্রদান করেন।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা দেশের স্থলবন্দরসমূহকেও এ কৌশলপত্রের সাথে সমান্তরালে সংযুক্ত রেখে সমুদ্রবন্দর ও অভ্যন্তরীণ নদী-বন্দরসমূহের যাবতীয় কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ করেন। জাতীয় এ কৌশলপত্র প্রণয়নের মাধ্যমে দেশের মেরিটাইম সেক্টরে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বর্ণিত কৌশলপত্র প্রণয়নে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ প্রদান করেন এবং প্রয়োজনে আইএমও থেকেও কারিগরি সহায়তা নেয়া যেতে পারে মর্মে মতামত প্রদান করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, দেশের বন্দরসমূহের বিভিন্ন সমস্যা চ্যালেঞ্জ ও সমাধানের কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়িত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম ও অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। সভায় বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ও ভারপ্রাপ্ত সচিব দেলোয়ারা বেগমসহ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থার প্রধানগণ ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।