যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটকের কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা চালুর কয়েক ঘণ্টা আগেই অ্যাপটি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। রোববার (১৯ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাপে ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউজাররা। তাদেরকে এই বার্তাটি দেখানো হচ্ছে, ‘দুঃখিত। এ মুহূর্তে টিকটকের সেবাগুলো চালু নেই। যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে একটি আইন চালু করা হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এর অর্থ হলো আপনি আপাতত টিকটক ব্যবহার করতে পারছেন না।’
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ১৭ কোটিরও বেশি গ্রাহক রয়েছে। কিন্তু এর চীন-ভিত্তিক মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। টিকটকের মাধ্যমে চীন সরকার মার্কিন জনগণের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করতে পারে, এই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে মার্কিন প্রশাসন।
শুক্রবার জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে টিকটক নিষিদ্ধে দেয়া রায় পুনর্বহাল রেখেছেন মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান জানালেও টিকটকের ভাগ্য নিয়ে আশার বাণী শোনান নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অ্যাপটি চালু রাখতে রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার আশ্বাস দিয়েছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিক্রি বা নিষেধাজ্ঞার আইনটি ৬০ থেকে ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখতে একটি নির্বাহী আদেশ দেয়ার কথা বিবেচনা করছেন ট্রাম্প। এর মাঝেই একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে চান তিনি। যাতে যুক্তরাষ্ট্রে চালু থাকতে পারে অ্যাপটি।
এমন উদ্যোগ নেয়ায় ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছে টিকটকের প্রধান নির্বাহী শু জি চিউ বলেন, তার এই প্রতিশ্রুতি বাকস্বাধীনতার পক্ষেগুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। এছাড়া ব্যবহারকারীদের উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তায় টিকটক চালু রাখতে তাদের পাশে থাকার অনুরোধ জানান চিউ।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধের ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নিউইয়র্ক, মিনেসোটা এবং মিশিগানসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের ব্যবহারকারীরা। তাদের দাবি, টিকটক শুধুমাত্র একটি বিনোদন প্ল্যাটফর্ম নয়, বরং অনেকের কাছে এটি আয়ের উৎস। তাই নিষিদ্ধ হলে এটি শুধু ব্যবহারকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে না, বরং মার্কিন অর্থনীতির ওপরও প্রভাব ফেলবে।
ব্যবসায়ী ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা অন্যান্য মাধ্যমে নিজেদের উপস্থিতি বাড়ানোর চেষ্টা করলেও টিকটক নিষিদ্ধ হওয়া তাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন অনেকে।