ঢাকারবিবার , ১০ নভেম্বর ২০২৪
  • অন্যান্য

লাউয়াছড়া উদ্যানের ২০০ একর জমি বেদখল, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ১০, ২০২৪ ৩:৩৫ অপরাহ্ণ । ২১ জন

মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের অন্তত ২০০ একর জমি বেদখল করে নির্মাণ করা হয়েছে রিসোর্টসহ ঘরবাড়ি। সীমানা চিহ্নিত করতে ২৮ বছরেও হয়নি ভূমি জরিপ। বন বিভাগের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

দেশের অন্যতম চিরহরিৎ বন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। পাহাড়-টিলা সমতল ঘেরা বৈচিত্রময় উদ্যানের এ বনে ২২ প্রজাতির উভয়চর প্রাণীসহ অসংখ্য বিরল ও বিপন্ন প্রাণির আবাসস্থল। সেইসঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির দুর্লভ বৃক্ষ আর পশুপাখির অভয়ারণ্য। দেশ-বিদেশের গবেষক এবং অনেক পর্যটক এখানে এসে ভিড় করেন।

তবে জাতীয় উদ্যান ঘোষণার ২৮ বছরেও এ উদ্যানের ভূমি জরিপ কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। ফলে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের সীমানা নির্ধারণ করে ভূমি সংরক্ষণে কোনো ব্যবস্থা নেই। এদিকে লাউয়াছড়ার আশপাশ জুড়ে একাধিক গ্রাম ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বেশকিছু জমি রয়েছে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কতিপয় ব্যক্তি বিশেষ বনের জমি দখলে নিয়ে বিভিন্ন ফলের বাগান গড়ে তুলছে।

শুধু তাই নয়, উদ্যানের অনেক স্থানে ঘরবাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। পরিবেশকর্মী ও স্থানীয় লোকজনেরা বলছেন, উদ্যানের জমিতে রিসোর্টসহ প্রায় ২০০ একর জমি বিভিন্নভাবে দখলদারদের হাতে চলে গেছে। সম্প্রতি সাবেক কৃষি মন্ত্রী এম এ শহীদের দখলে থাকা ৫ একর জমিসহ প্রায় ৯ একর জমি বন বিভাগ দখলদারমুক্ত করা হয়েছে। উদ্যানের বেদখলে থাকা জমি উদ্ধারের দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয়রা জানান, লাউয়াছড়া উদ্যানের যে সীমানা প্রাচীর দেয়ার কথা, সেটি এখনো হয়নি। ফলে প্রতিনিয়ত জায়গা দখল হচ্ছে। এখনই এসব দখলদারদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

লাউয়াছড়া বন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা আন্দোলনে আহ্বায়ক জলি পাল বলেন, ‘ম্যাপে বনের প্রকৃত জমির পরিমাণ অনুযায়ী যাতে সীমানা নির্ধারণ করা হয়, সে বিষয়ে ছাড় দেয়া যাবে না।’

আর বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জানান, উদ্যানের জমি জরিপ এবং সীমানা নির্ধারণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে।

সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘যথাযথ নিয়ম মেনে বনের সীমানা নির্ধারণের ব্যবস্থা করা হবে।’

১ হাজার ২৫০ হেক্টর আয়তনের এ লাউয়াছড়া বন, দেশের চিরহরিৎ বনের একটি উল্লেখযোগ্য নমুনা। ১৯৯৬ সালে সরকার এটিকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা দেয়।