ঢাকারবিবার , ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • অন্যান্য

সপ্তাহ ব্যবধানে মমেক হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪ ১২:১০ অপরাহ্ণ । ২৮ জন

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সপ্তাহের ব্যবধানে ভর্তি প্রায় দ্বিগুণ। রোগী বাড়ায় চালু করা হয়েছে আলাদা ডেঙ্গু ওয়ার্ড। তবে ডেঙ্গু মোকাবিলায় নগরীতে দেখা নেই সিটি করপোরেশনের দৃশ্যমান উদ্যোগ।

ঢাকা জজ কোর্টের শিক্ষানবিশ আইনজীবী রফিউজ্জামান রিফাত। গত ১১ সেপ্টেম্বর জামালপুরের বকশিগঞ্জে নিজ বাড়িতে আসার পথেই জ্বরে আক্রান্ত হন। পরদিন থেকে প্রচণ্ড বমি। পরীক্ষা করে জানতে পারেন তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন রিফাত।

রফিউজ্জামান রিফাত বলেন, ‘আমি ট্রেনে করে বাড়ি ফিরছিলাম। পথেই হঠাৎ প্রচণ্ড জ্বর উঠে। পরে দুদিন ১০৫ ডিগ্রি পর্যন্ত জ্বর ছিলো। টেস্ট করার পর ডেঙ্গু ধরা পড়লে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি হই। প্লাটিলেট অনেক কমে গিয়েছিল। এখন অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।’

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। চলতি মাসে এরইমধ্যে চিকিৎসা নিয়েছেন দেড় শতাধিক। সপ্তাহ ব্যবধানে ভর্তি প্রায় দ্বিগুণ রোগী। চালু করা হয়েছে আলাদা ডেঙ্গু ওয়ার্ড। যেখানে বর্তমানে চিকিৎসাধীন এক শিশু ও দুই নারীসহ ২৮ জন। যাদের বেশিরভাগই আক্রান্ত ঢাকা, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় অবস্থানকালে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, চলতি মাসে রোগীর পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছে। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভর্তি হয় ২৯ জন। ৮-১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভর্তি হয় ৪৯ জন। পরের সপ্তাহে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ভর্তি হয় ৮৭ জন রোগী।

কয়েকজন রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও কিশোরগঞ্জসহ আশপাশের এলাকা থেকে এসে ভর্তি হয়েছেন মমেক হাসপাতালে। তাদের প্রায় সবার অবস্থা উন্নতির দিকে।

হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডের ফোকাল পার্সন ডা. মো. মহিউদ্দিন খান মুন বলেন, ‘ময়মনসিংহের বাসিন্দা হলেও কাজের সূত্রে বেশিরভাগ রোগীই ঢাকা থেকে এসেছেন। স্থানীয় রোগীও আছে তবে ঢাকা থেকে আগত রোগীই বেশি এই ওয়ার্ডে।’

হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়লেও তাদের সেবা দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়ে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস বলেন, ‘রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে আমরা স্বতন্ত্র একটি ওয়ার্ড চালু করেছি। রোগী বাড়লেও আমাদের চিকিৎসা দিতে কোনো অসুবিধা হবে না।’

এদিকে ময়মনসিংহ নগরীতে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি এবং ডেঙ্গু চোখ রাঙালেও এখনো কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেই সিটি করপোরেশনের, এমন অভিযোগ বাসিন্দাদের।

যদিও সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, ‘চলমান মশক নিধন কার্যক্রমের পাশাপাশি ডেঙ্গু মোকাবিলায় শিগগিরই চালু করা হবে ক্রাশ প্রোগ্রাম। আশাকরি গতবারের মতো এবারও ডেঙ্গু মোকাবিলা করতে সক্ষম হবো।’

গত বছর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় ৩ হাজার ৭২০ জন ডেঙ্গু রোগী। মৃত্যু হয় ১৩ জনের।