ঢাকামঙ্গলবার , ১২ ডিসেম্বর ২০২৩
  • অন্যান্য

চিকিৎসা-ব্যয়ই সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা বাস্তবায়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা

সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিবস আজ

পাবলিক হেলথ ডেস্ক
ডিসেম্বর ১২, ২০২৩ ৭:৩৩ অপরাহ্ণ । ৭৩০ জন

সব মানুষের জন্য বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে গুণগত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার (ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ-ইউএইচসি) মূলনীতি হলেও তা অর্জনে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।

সংবিধানে স্বাস্থ্যসেবাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও চিকিৎসক ফি, রোগ নির্ণয় ও ওষুধ কিনতে রোগীকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ব্যক্তিকেই চিকিৎসা ব্যয়ের শতকরা ৭২ ভাগ বহন করতে। সরকারি গবেষণাতেই দেখা যাচ্ছে যে নাগরিকের মাথাপিছু সরকারি বরাদ্দ কমেছে। স্বাস্থ্যব্যয় বহন করতে গিয়ে বছরে ৮৬ লাখের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ব্যয় হচ্ছে ওষুধের পেছনে— ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এ ছাড়া রোগ শনাক্তে ১১ দশমিক ৭ শতাংশ, বিকল্প চিকিৎসা সেবায় ১৩ দশমিক ২ শতাংশ এবং হাসপাতালে খরচ ১০ দশমিক ১ শতাংশ।

এমন পরিস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার ১২ ডিসেম্বর দেশে পালিত হচ্ছে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘হেলথ ফর অল: টাইম ফর অ্যাকশন’, অর্থাৎ সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবার উদ্যোগ নেওয়ার এখনই সময়। এবারের প্রতিপাদ্যে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি, চিকিৎসা নিতে গিয়ে সর্বস্বান্ত না হওয়া এবং জনস্বাস্থ্য সংকট থেকে রক্ষার উপায় সম্পর্কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশে জিডিপির ২ থেকে ৩ শতাংশ স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ থাকলেও বাংলাদেশে তা ১ শতাংশেরও কম। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৯৭ সাল থেকে স্বাস্থ্য ব্যয়ে সরকারের মাথাপিছু বরাদ্দ বাড়েনি বরং কমেছে। সরকার ২০১২ সালে চিকিৎসায় রোগীর ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নেয়। ওই বছর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগ সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনের কৌশলপত্র প্রণয়ন করে। সেখানে ২০৩০ সালের মধ্যে চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৮ শতাংশ রাষ্ট্রীয় অর্থে এবং অবিশিষ্ট ৩২ শতাংশ রোগী পরিচালনা করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়। এরপর এক যুগেরও বেশি সময় পার হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। উল্টো ২০১৫ সালে ব্যক্তির চিকিৎসা ব্যয় ৬৪ থেকে বেড়ে ৬৭ শতাংশ হয়। ২০২০ সালে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, একজন ব্যক্তি স্বাস্থ্য খাতে মোট ব্যয়ের ৬৮ দশমিক ৫ শতাংশ নিজেই বহন করেন। গত তিন বছর ধরে এ খাতে গবেষণা সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বর্তমানে জনপ্রতি ১০০ টাকা ব্যয়ের মধ্যে ৭২ দশমিক ৭০ টাকা রোগীর নিজের পকেট থেকে দিতে হয়।

বিশ্বব্যাংকের সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা সূচকে এখনো অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ। ১০০ স্কোরে বাংলাদেশের অবস্থান ৫১, যেখানে নেপালের ৫৩, ভারতের ৬১, ভুটানের ৬২, শ্রীলঙ্কার ৬৭ ও মালদ্বীপের ৬৯। অন্যদিকে ৪৫ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের নিচে আছে পাকিস্তান।