সেন্ট মার্টিনে পর্যটক যাওয়া ও রাত্রি যাপন বন্ধ করলে রাজপথে পথে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন বন্ধ করবো না বলে জানিয়েছেন ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সভাপতি মোহাম্মদ রাফেউজ্জামান।
গতকাল (২৭ অক্টোবর) রোববার সেন্টমার্টিন’স দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোট আয়োজিত রাজধানীর পল্টনস্থ ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এর মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথ বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সেন্টমার্টিন’স দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের চেয়ারম্যান শিবলুল আজম কোরেশি, এইচআর গ্রুপের চেয়ারম্যান ও জোটের প্রচার সম্পাদক হাবিবুর রহমান ও ই-ট্যুরিজম এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ট্যাব) সভাপতি ইমরানুল আলমসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। টুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (টোয়াব) এর নেতৃবৃন্দ, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার এর নেতৃবৃন্দ, সেন্টমার্টিন’স দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের নেতৃবৃন্দ, ই-ট্যুরিজম এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ট্যাব) এর নেতৃবৃন্দ।
টোয়াবের সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, আমাদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও সেন্টমার্টিনে রাত্রি যাপন ও পর্যটক যাতায়াত সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, নভেম্বর মাসে সেন্টমার্টিনে কোন পর্যটক রাত্রি যাপন করতে পারবে না। আর ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দিনে ২০০০ পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন এবং রাত্রি যাপন করতে পারবেন। আর ফেব্রুয়ারি মাসে সেন্টমার্টিনে সরকার পর্যটক যাতায়াত বন্ধ রাখবে। এতে পর্যটন শিল্প ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সাধারণ উদ্যোক্তারা সর্বশান্ত হয়ে যাবে।
সেন্টমার্টিনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বাস করে। এরা সবাই পর্যটনের উপর নির্ভরশীল। সেন্টমার্টিনে পর্যটন সীমিত করা হলে অথবা বন্ধ করা হলে এরা সবাই বেকার হয়ে যাবে। সেই সাথে উদ্যোক্তাদের আর্থিক বিনিয়োগ মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে। ফলে তিনি সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান এবং অনতিবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান।
তিনি আরো বলেন, আমরা সেন্টমার্টিনের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষা করতে চাই, তবে পর্যটন বন্ধ করে দিয়ে নয়। বরং পরিবেশের অনুকূলে সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
সংবাদ সম্মেলনে সেন্টমার্টিন’স দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের চেয়্যারম্যান শিবলুল আজম কোরেশি বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করে রাত্রিযাপনসহ যাবতীয় বিধি-নিষেধ ব্যতিরেকে পর্যটন চালু রাখা এবং টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে বিকল্প পথ তৈরি করতে হবে।
তিনি আরও দাবি করেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশসহ জীববৈচিত্র সংরক্ষণ এবং পর্যটনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করে পর্যটন উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। দ্বীপে লোনা পানি মিঠা পানিতে পরিণত করার নিমিত্বে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করতে হবে। পচনশীল বর্জ্য ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে বায়োগ্যাসে পরিণত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দ্বীপে জেনারেটর ব্যবহার বন্ধ করে পরিবেশবান্ধব সোলার প্লান্ট স্থাপন করতে হবে এবং ইট, বালু, সিমেন্ট, রড ব্যবহার করে স্থায়ী স্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।