ঢাকাশনিবার , ৯ ডিসেম্বর ২০২৩
  • অন্যান্য

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস ’২৩

স্থানীয় জনগোষ্ঠির মালিকানায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির দাবিতে চট্টগ্রামে ‘মানব প্রদর্শন’ অনুষ্ঠিত

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
ডিসেম্বর ৯, ২০২৩ ৭:৫৯ অপরাহ্ণ । ৪৫৯ জন

৯ ডিসেম্বর ২০২৩ শনিবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস ’২৩ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রামের সিআরবি চত্ত্বরে জ্বালানিখাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ ও স্থানীয় জনগোষ্ঠির মালিকানায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির দাবিতে ‘মানব প্রদর্শন’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা বলেন, জ্বালানির অধিকার সর্বজনীন মানবাধিকারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও সে অধিকার নিশ্চিত করতে অনেকের জীবন-জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।

বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠন আইএসডিই বাংলাদেশ, ক্যাব যুব গ্রুপ, বিডাব্লুজিইডি (বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ ফর ইকোলোজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ক্লীন (কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভার্মেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক) যৌথ আয়োজনে মানবাধিকার দিবসে জলবায়ু সুবিচারের দাবি জানিয়ে কর্মসূচিতে সংহতি জানান আইএসডিই বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ও ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস. এম. নাজের হোসাইন, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদের যুগ্ন সম্পাদক মোহাম্মদ জানে আলম, ক্যাব সদরঘাটের সভাপতি শাহীন চৌধুরী, ক্যাব পাহাড়তলী থানা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা হারুন গফুর ভূইয়া, ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি আবু হানিফ নোমান প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, পৃথিবীর বেশিরভাগ উন্নত দেশগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পরিবেশে ধ্বংস করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনে জমি অধিগ্রহণে স্থানীয় জনগোষ্ঠি যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, একইভাবে কর্মরত শ্রমিকেরাও নানাভাবে মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অধিগ্রহণে স্থানীয় জমির মালিকরা মধ্যস্বত্বভোগীদের দিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন। বে-আইনি জমি অধিগ্রহণের কারণে অনেক পরিবার বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন এবং কৃষক-মৎস্যজীবীসহ অনেকেই তাদের পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছেন, যা সুষ্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন।

বক্তারা অভিযোগ জানিয়ে বলেন, বিদ্যুৎ সেক্টরে শ্রমিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বড় দৃষ্টান্ত হলো চট্টগ্রামের বাঁশখালির বিদ্যুৎকেন্দ্র। এস. আলম গ্রুপ ও চীনের সেপকো ও এইচটিজি গ্রুপের মালিকানাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের বকেয়া মজুরিসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করতে গিয়ে ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে ১২ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও বিদ্যুত কেন্দ্রের কর্মপরিবেশ একেবারেই অনূকুল নয়। নিজেদের সুরক্ষা সরঞ্জাম নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রে কাজ করতে হয়, স্থানীয় শ্রমিকদের যেকোনো দুর্ঘটনায় অঙ্গহানি হলেও শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

বক্তারা দাবি জানান যে কৃষিজমি বা বাস্তভিটায় আর কোনো জ্বালানি প্রকল্প নেওয়া যাবে না; সাধারণ মানুষকে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না; অধিগ্রহণকৃতদের জায়গায় গৃহিত প্রকল্পের লভ্যাংশ তাদেরকে নিয়মিত দিতে হবে; বিদ্যুৎকেন্দ্র সংক্রান্ত যে-কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই স্থানীয়দের অংশগ্রহণ ও তাদের মতামতের গুরুত্ব দিতে হবে; ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া, ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ ও বিতরণ এবং ক্রয় সংক্রান্ত কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে; প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে সংঘটিত দুর্নীতির তদন্তপূর্বক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে; সকল বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়ন করে তাদের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে; স্থানীয় পরিবেশের ক্ষতি করে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা যাবে না; নারী অধিকার রক্ষায় যে-কোন জ্বালানি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ নারী সদস্য মনোনীত করতে হবে; দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্পের ক্ষেত্রে ভূমি ইজারা নিতে হবে এবং জমির বার্ষিক ভাড়া প্রদানের সুষ্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে এবং কৃষিভিত্তিক সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে অর্থায়ন করতে হবে।