ঢাকাবুধবার , ১২ জুলাই ২০২৩
  • অন্যান্য

আজকের সর্বশেষ সবখবর

সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাধ্যমে মৃত্যু কমাতে সড়ক-সংর্ঘষের তথ্য-উপাত্ত কাজে লাগাতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই ১২, ২০২৩ ৫:২২ অপরাহ্ণ । ৩৩৯ জন

টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার অন্যতম শর্ত সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আর সড়ক-সংঘর্ষ প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দুর্ঘটনার সঠিক তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা এসব তথ্যউপাত্ত যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে পারবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম আজ বুধবার চসিক কনফারেন্স রুমে আয়োজিত রোডসাইড অবজারভেশনাল স্টাডির ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে একথা বলেন।

সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশের (সিআইপিআরবি) সহায়তায় Pসিক এবং জন্স হপকিন্স ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিট যৌথ ভাবে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে। ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেইফটির (বিআইজিআরএস) অংশ হিসেবে জন্স হপকিন্স ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিট তাদের স্থানীয় অংশীদার সিআইপিআরবি’র সাথে সড়ক নিরাপত্তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের অংশ হিসেবে চসিক এলাকায় পর্যায়ক্রমে রোডসাইড অবজারভেশনাল স্টাডি পরিচালনা করছে।  মে ২০২২ সাল হতে চসিক আওতাভুক্ত নির্বাচনী এলাকা থেকে ইতোমধ্যে ২ রাউন্ড তথ্য সংগ্রহ সম্পন্ন হয়েছে।

জন্স হপকিন্স ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিটের সহযোগী বৈজ্ঞানিক ডা. শিরিন ওয়াধানিয়া প্রতিবেদনের ফলাফল উপস্থাপন করেন এবং সেন্টার ফর ইনজুরি প্রভিনেশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদশের পক্ষে ডা. সেলিম মাহমুদ চৌধুরী গবেষণার উদ্দেশ্যসমূহ তুলে ধরেন। ডা. শিরিন ওয়াধানিয়া তার উপস্থাপনায় উল্লখে করেন যে, ২০২১ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৯৫ শতাংশ দায়ী ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা ব্যবহারকারীগণ (পথচারী, মোটরসাইকেল চালক এবং সাইকলে চালক)।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে শতকরা ৪০ ভাগ ক্ষেত্রে যানবাহনগুলো গতিসীমা অতিক্রম করে। গতি সীমা অতক্রিম করার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় বাসের ক্ষেত্রে (৪৮%)। মোটরসাইকেল চালকদের মধ্যে যথাযথ নিয়মে হেলমেট ব্যবহারের হার কিছুটা কম পরিলক্ষিত হয় (৬৮%) এবং আরোহীদের মধ্যে যথাযথ নিয়মে হেলমেট ব্যবহারের হার আরো কম পরিলক্ষিত হয় (২০%)। সকল ধরনের (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) যানবাহন ব্যবহারকারীদের মধ্যে সিটবেল্ট ব্যবহারের হার ছিলো খুবই কম (১৫%)। এছাড়া যাত্রী ও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত যানবাহন ব্যবহারকারীদের মধ্যে সিটবেল্ট ব্যবহারের প্রবণতা নেই বললেই চলে।  ভারী যানবাহনের চালকদের ক্ষেত্রে সিটবেল্ট ব্যবহারের হার খুবই কম (৩ শতাংশ)। যানবাহনে যাতায়াতকারী শিশুদের মধ্যে কাউকেই চাইল্ড-সিট তথা চাইল্ড-রেস্টিয়েন্ট ব্যবহার করতে দেখা যায়নি।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ফয়সাল মাহমুদ পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক), চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) বলেন, পুলিশের পাশাপাশি সকল অংশীজনকে নিয়ে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক গৃহীত উদ্যোগসমূহ ও চলমান র্কাযক্রমের কথা উল্লেখ করেন।  তিনি আরও বলনে BIGRS এ অংশগ্রহণের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সড়ক নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট নানাবিধ র্কাযক্রম বাস্তবায়ন করছে।

প্রকৌশলী জনাব মনিরুল হুদা, অতিরিক্ত প্রধান কৌশলী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন উপস্থিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করনে এবং সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ব্লুমর্বাগ ফিলানথ্রপিসের প্রচষ্টোর জন্য শুভচ্ছো জানান এবং সাফল্য কামনা করনে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিআইপিআরবি রোড সেফটি প্রজেক্টের ম্যানেজার কাজী বুরহান উদ্দিন। অনুষ্ঠানে বিআরটিএ, ফায়ার ব্রিগেড, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ, যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধি এবং বিআইজিআরএসের অংশীদার সংস্থার প্রতিনিধিরা এবং সুশীল সমাজের বিভিন্ন সংস্থাসমূহের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করনে।

বিশ্বব্যাপী সড়ক দুর্ঘটনা বিশ্বব্যাপী মানুষের মৃত্যু ও দীর্ঘমেয়াদী পঙ্গুত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত ‘গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট অন রোড সেইফটি ২০১৮’- এর তথ্যমতে, বিশ্বে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় (রোড ক্রাশ) প্রায় ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়াও ২০-৫০ লক্ষ মানুষ বিভিন্ন মাত্রায় আহত হয় বা পঙ্গুত্বের শিকার হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে ২৪,৯৫৪ জন সড়ক র্দুঘটনায় নিহত হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিশ্চিত করতে এবং সড়ক র্দুঘটনাকে (রোড ক্রাশ) সহনীয় মাত্রায় রাখতে ব্লুমর্বাগ ফিলানথ্রপিস চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও শহরে কাজ করে যাচ্ছে।