গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আকস্মিক লিফট বন্ধ হয়ে মমতাজ বেগম (৫৩) নামে একজন রোগী মারা গেছেন। তিনি কাপাসিয়া উপজেলার বাড়িগাঁও গ্রামের শারফুদ্দিনের স্ত্রী। রবিবার (১২ মে) বেলা ১১টায় এ ঘটনা ঘটে।
রোগীর ভাই শাহদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘আমি রোগী নিয়ে লিফটের ১১ তলা থেকে ৪ তলায় আসার পথে লিফট আকস্মিক বন্ধ হয়ে যায়। এতে ৪৫ মিনিট (পৌনে এক ঘণ্টা) লিফটের ভেতরে রোগী নিয়ে আটকে পড়ি। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে লিফট ফাঁকা করে আমাদের বের করেন। বের হওয়ার আগেই আমাদের রোগী মারা যান।’
অভিযোগের সুরে রোগীর মেয়ে শারমিন আক্তার বলেন, ‘আমার মা সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে সকাল ৬টায় হাসপাতালে নিয়ে আসি। প্রথমে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হয়। সেখানে পরীক্ষার পর জানা যায়, হার্টের কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। পরে হাসপাতালের ১১ তলা থেকে ৪ তলার হৃদরোগ বিভাগে নেওয়ার কথা বলে। লিফটে উঠলে ৯ তলার মাঝামাঝি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় আমি, আমার মামা, ভাইসহ কয়েকজন মাকে নিয়ে ভেতরে ছিলাম। আমাদের দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। আমরা লিফটে থাকা তিন জন লিফটম্যানের নম্বরে কল দিই। তারা গাফিলতি করেন। ফোনে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘৪৫ মিনিট আমরা ভেতরে অবস্থান করেছি। উপায় না পেয়ে ৯৯৯–এ ফোন দিই। ফোন পেয়ে ফায়ার সার্ভিস এসে উদ্ধার করে। লিফটম্যানদের গাফিলতির কারণে আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে।’
গাজীপুর তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার হাসনিন জাহান বলেন, ‘লিফটের ভেতরে একজন রোগী মারা গেছেন। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানা যাবে।’
হাসপাতালের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সকালে মমতাজ বেগমকে বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আনা হয়। পরে মেডিসিন বিভাগ থেকে ৪ তলায় নেওয়ার জন্য লিফটে তোলা হয়। এ সময় লিফটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এতে দীর্ঘ সময় লিফট আটকে থাকেন। পরে লিফটম্যান ও ফায়ার সার্ভিসের লোক এসে উদ্ধার করেন। লিফটে আটকা সবাই সুস্থ ছিলেন, কিন্তু উনি অসুস্থ থাকায় মারা গেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হবে। কারও কোনও গাফিলতি আছে কিনা, সেটি দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।