ঢাকাশনিবার , ২ নভেম্বর ২০২৪
  • অন্যান্য

আগামী প্রজন্মকে দূষণমুক্ত নদী-খাল দেখাতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ২, ২০২৪ ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ । ২৮ জন

আগামী প্রজন্মকে দূষণমুক্ত নদী দেখাতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এই প্রজন্ম পরিষ্কার নদী ও পরিষ্কার খাল দেখে নাই। আমরা ছোটবেলায় দেখেছি। তাই নদীর জন্য মন খারাপ করি। শুক্রবার (১ নভেম্বর) ঢাকায় রামপুরা-জিরানী খাল পরিচ্ছন্ন অভিযান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানিসম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।

তিনি এই প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা পরিষ্কার নদী দেখেননি। নদী পরিষ্কার হলে মানুষের কত কাজে লাগে এটা আপনারা জানেন না।

এর আগে রামপুরা ত্রিমোহিনী ঈদগাহ মাঠে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আয়োজনে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া রামপুরা-জিরানী খাল পরিচ্ছন্ন অভিযানের উদ্বোধন করেন। এরমধ্য দিয়ে সারা দেশে একযোগে ৬৪ জেলায় ৬৪টি চিহ্নিত খাল/জলাশয় পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম শুরু হয়।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, আজকে আপনাদের হাত দিয়ে যে খালটা পরিষ্কার হবে, এই খালটা যেন আগামীতেও পরিষ্কার থাকে। আগামী দিনের নেতা হিসেবে এ দায়িত্বটা কিন্তু আপনাদেরকে নিতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, আজকে সারাদেশে ৬৪ জেলায় নির্বাচিত ৬৪টি খাল-জলাশয় পরিচ্ছন্নকরণ অভিযানের ধারণাটি এসেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে এবং এটাই হচ্ছে যুবকদের শক্তি। আজকে এই খাল পরিচ্ছন্নকরণ অভিযানে অংশ নিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, ডিএসসিসিসহ অনেকেই।

উপদেষ্টা আরও বলেন, যারা বলেন সরকারের মধ্যে সমন্বয় নেই, কো-অর্ডিনেশন নেই, আমরা কিন্তু তা আস্তে আস্তে ভুল প্রমাণ করেছি। জাতীয় স্বার্থে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আজকের এই খাল পরিচ্ছন্নকরণ অভিযান অত্যন্ত সুসমন্বয়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এটাই তার বড় প্রমাণ।

উপদেষ্টা বলেন, আমরা যে ৬৪ জেলায় ৬৪টি খাল পরিষ্কার করার কর্মসূচি হাতে নিয়েছি এটা আজকে থেকে শুরু হয়ে আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত চালু থাকবে। এটা এখানেই শেষ করে দেব না, আমরা প্রত্যেকটি খালকেন্দ্রিক স্থানীয় পর্যায়ে একটি করে কমিটি করে দেব। কমিটিতে যারা থাকবেন তারা দেখবে যে খালটা কারা আবার নোংরা করার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, খালের আশেপাশে যারা বাসা-বাড়ি ও দোকান-পাটের মালিক, যারা মনে করেন খালটাই হচ্ছে আপনাদের সম্পত্তি এবং এটা নোংরা করার আপনাদের অধিকার, তাহলে যুব সম্প্রদায় আপনাদেরকে স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে এই জাতীয় সম্পত্তি নষ্ট করার অধিকার আপনাদের নাই।

স্বাগত বক্তব্য দেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন পানি সম্পদ সচিব নাজমুল আহসান।

উল্লেখ্য যে, ঢাকায় শনিবার থেকে শুরু হওয়া হওয়া খাল পরিচ্ছন্নকরণ অভিযানে জিরানী খালের ১৪টি স্পটে বিডি ক্লিন-সি এর ৫০০ জন স্বেচ্ছাসেবী এবং নোঙ্গর বাংলাদেশের ২০০ স্বেচ্ছাসেবীসহ মোট ৭০০ স্বেচ্ছাসেবী এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়া, রামপুরা খালের পরিচ্ছন্ন অভিযানে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের বিভিন্ন যুব সংগঠনের যুবকর্মীরা অংশগ্রহণ করেছে।

রামপুরা-জিরানী খাল পরিচ্ছন্নকরণ অভিযানে স্বেচ্ছাসেবী ও যুব সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিও, স্থানীয় সরকার ও প্রশাসন, ডিএসসিসি, বিআইডব্লিউটিএ, ডব্লিউএআরপিও, বিডব্লিউডিবি, বন বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, প্রশিক্ষণার্থী, আত্মকর্মী-উদ্যোক্তা ছাত্র-যুব ও জনগণের অংশগ্রহণে এ পরিচ্ছন্নকরণ অভিযান। বিশ্ব ব্যাংকের আওতাধীন ডব্লিওআরজি-২০৩০ প্রতিষ্ঠানটি খাল পরিচ্ছন্নকরণ অভিযানের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করে। এছাড়া, ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন অফিস মেডিকেল টিম দিয়ে খাল পরিচ্ছনকরণ অভিযানে সহযোগিতা করে।