আজ ২০ আগস্ট, ‘বিশ্ব মশা দিবস’। বিশ্বব্যাপী মশাবাহিত রোগের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনসাধারণকে বিশেষভাবে সচেতন করার জন্য প্রতি বছর ২০ আগস্ট দিবসটি পালন করা হয়। ১৯৩০ সাল থেকে ‘বিশ্ব মশা দিবস’ পালিত হয়ে আসছে।
বিশ্বে মশা আছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার প্রজাতির। এর মধ্যে ১০০ প্রজাতির মশা কেবল রোগ ছড়ায়। এখনও পর্যন্ত মশা থেকে ২০ ধরনের রোগ ছড়ানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। গবেষকদের মতে, বাংলাদেশে মশা আছে ১২৩ প্রজাতির, এরমধ্যে শুধু ঢাকাতেই আছে ১৪ প্রজাতির। এ পর্যন্ত দেশে মশাবাহিত পাঁচটি রোগের সন্ধান পাওয়া গেছে। এগুলো হচ্ছে— ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং জাপানিজ এনসেফালাইটিস।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সারা বিশ্বে মশাবাহিত রোগে বছরে সাত লাখেরও বেশি মানুষ মারা যায়। যেসব সংক্রামক রোগে মানুষ আক্রান্ত হয়, তার ১৭ শতাংশই মশাবাহিত।
ভারতীয় মেডিক্যাল সার্ভিস কোরের মেডিক্যাল অফিসার রোনাল্ড রস ১৮৯৭ সালে উদ্ভাবন করেন অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়া পরজীবী বহন করতে পারে। তিনি ২০ আগস্ট তার আবিষ্কারের এই দিনটিকে ‘মশা দিবস’ বলে অভিহিত করেছিলেন। ‘লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন’ রোনাল্ড রসের এই আবিষ্কারের তাৎপর্য তুলে ধরতে ২০ আগস্টকে ‘বিশ্ব মশা দিবস’ হিসেবে নামকরণ করে।
মশাবাহিত অন্যান্য রোগের তুলনায় বাংলাদেশে মূলত ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ তুলনামূলক বেশি। দেশে ২০০০ সাল থেকে প্রথম ডেঙ্গু রোগীর তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সে বছর ডেঙ্গুতে মারা যায় ৯৩ জন এবং আক্রান্ত হয় ৫ হাজার ৫৫১ জন। তবে দেশে ডেঙ্গুর বিস্তার সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে ২০১৯ সালে। সে বছর সরকারি হিসেবে ডেঙ্গু জ্বরে ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে ভর্তি হন ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন। গত বছর (২০২২) দেশে ডেঙ্গু জ্বরে মারা যায় ১০৫ জন এবং আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ২৮ হাজার ৪২৯ জন। চলতি বছরেও ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা লাখের কাছাকাছি। আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত মারা গেছে ৪৬৬ জন, যা এ যাবৎ কালের মধ্যে সর্বোচ্চ।