ঢাকাসোমবার , ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর পানি কমলেও দেখা দিয়েছে ভাঙন

নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪ ১২:১৭ অপরাহ্ণ । ২৯ জন

উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে গত তিন দিন ধরে কুড়িগ্রামের ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার নদের পানি সমতলে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। তবে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছিল রাজারহাট,উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার চরাঞ্চলের মানুষজন। আজ সকাল থেকে পানি কমে যাওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরেছে। তবে পানি কমার সাথে সাথে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙনের। ইতিমধ্যে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে ৬০ পরিবারের বসতভিটা বিলীন হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকাল ৯ টার তথ্য মতে, জেলার তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি কমে বিপৎসীমার ৬ সেঃমিঃ নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ধরলা নদীর তালুক শিমুল বাড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৯.৮৭ সেঃ মিঃ ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ২০.৯৮ ও দুধকুমার নদে নুন খাওয়া পয়েন্টে ২৩.৭৫ সেঃ মিঃ নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সবগুলো নদ নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও নতুন করে দেখা দিয়েছে ভাঙন।

রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তিস্তা নদী তীরবর্তী গতিয়াশাম এলাকার আব্দুল মজিদ বলেন, গত দুদিন ধরে তিস্তার পানি ঢুকে তিস্তার চরের বাদাম, সবিজর ক্ষেত ও ধান ক্ষেত তলিয়ে গেছে। তবে পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার কারণে সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হলেও ধান ক্ষেতের তেমন ক্ষতি হবে না। তবে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদী ভাঙনের মুখে পড়েছি। তিস্তা নদীতে পানি বাড়লেও ভাঙে, কমলেও নদী ভাঙন শুরু হয়।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ঘন শ্যামপুর গ্রামের রহিমুদ্দিন হায়দার বলেন, গত দু তিন দিন ধরে ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়েছে। আজও পানি বাড়ছে । পানি বাড়া নিয়ে আমাদের আতঙ্ক নেই কিন্তু নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এ তিনদিনে চর যাত্রাপুর গ্রামের প্রায় ৮-১০ টি ঘর বাড়ি নদীতে চলে গেছে।

এদিকে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া জানান, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে ঐ ইউনিয়নের খুদির কুটি গ্রামে তার নিজের বসতভিটাসহ ৬০টি পরিবারের বসতভিটা গত ৩দিনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ওই এলাকার আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়, দোতলা বিশিষ্ট বন্যা আশ্রয়ণ কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ওই স্থাপনাগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় মাত্র ২ মিঃমিঃ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী দুই তিনদের মধ্যে আবারো বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বলে জানান আবহাওয়া অফিস।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রাকিবুল হাসান বলেন, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের সুখের বাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী ভাঙনের মুখে পড়েছে। এছাড়াও ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুরি এলাকায় ১০০ মিটার এলাকা জুড়ে দুধকুমার নদ ভাঙছে।