ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ডিএপি) (২০২২-২০৩৫) অনুযায়ী কৃষিজমি, তিন ফসলি জমি ও জলাধার রক্ষায় উন্নত দেশগুলোর মতো ‘ট্রান্সফার অব ডেভেলপমেন্ট রাইট (টিডিআর)’ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। টিডিআর সিস্টেমের আওতায় কৃষিজমির মালিকরা শহরের অন্যান্য উন্নয়নশীল অংশে ভবন নির্মাণের জন্য শেয়ার বা অনুমতি পাবেন। কৃষি জমি সংরক্ষণ করেই নগর উন্নয়নের লক্ষ্যে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে বলে একটি সরকারি নথিতে জানা গেছে।
নথিতে বলা হয়, সম্পদ মূল্যের ভারসাম্য বজায় রেখে প্রাকৃতিকভাবে সুরক্ষিত এলাকার জমির মালিকদের ওই এলাকায় বাড়ি নির্মাণের পরিবর্তে কোনো উন্নয়নশীল এলাকায় বাড়ি নির্মাণের অধিকার স্থানান্তরের জন্য এই টিডিআর প্রোগ্রাম। বাড়ির সংখ্যা অপরিবর্তিতই থাকবে যাতে অন্য কোথাও মালিকানা পরিবর্তনের কারণে জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণও নিশ্চিত হয় আর লোকসানও না হয়।
সম্প্রতি জেলা প্রশাসক সম্মেলনে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের সময় তিন ফসলি জমি সংরক্ষণ নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নথিতে বলা হয়, ‘অভিযোগ উঠলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগগুলোর আবাসন বা অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজে তিন ফসলি জমি নির্বাচন না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব জমির অপব্যবহার রোধে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোরভাবে মনিটরিং করা হয়।
নথিতে তিন ফসলি জমিতে পুকুর খননের অনুমতি না দেওয়া এবং গণপ্রচারণার মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানোর মতো পদক্ষেপগুলোতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়, অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও জরিমানা করা হয়।
২০২৪ সালের প্রস্তাবিত ল্যান্ড জোনিং অ্যান্ড প্রোটেকশন অ্যাক্ট আরও নিশ্চিত করবে যে তিন ফসলি জমি শুধু কৃষিকাজে ব্যবহার করা হবে। এরইমধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এসব জমি সংরক্ষণের জন্য মহাপরিকল্পনা তৈরি করছে।
নগর উন্নয়ন দপ্তরের খসড়া পজিশন পেপারে অপরিকল্পিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের ফলে পরিবেশগত ক্ষতি এবং মূল্যবান কৃষিজমি হারানোর বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এর ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের জন্য একটি সমন্বিত ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে।
এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে নির্ধারিত তিন ফসলি জমিতে অননুমোদিত আবাসন ও পুকুর খনন বন্ধ করা যাবে বলে নথিতে বলা হয়েছে।