শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে বোরো ধানের বীজতলায় কোল্ড ইনজুরিসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে চাষিদের বোরো ধানের বীজতলার চারা লালচে, হলুদবর্ণ ধারণ করেছে।
এমন অবস্থায় চাষিরা ক্ষতির শঙ্কার কথা জানালেও কৃষি অফিস বলছেন, ধানের বীজ জমিতে বপনের উপযোগী হয়ে গেছে। তাই চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে কুয়াশা থেকে রক্ষায় পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে। বর্তমানে যে আবহাওয়া বিরাজ করছে তাতে এটুকু হওয়া স্বাভাবিক। এতে শঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই। কিছু বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বোরো মৌসুম শুরু হয়েছে। রাজশাহী জেলায় বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবছর বেড়েছে বোরো ধানের চাষ। এ বছর রাজশাহী জেলায় বোরো ধানের চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭০ হাজার ১৬৫ হেক্টর। গত বছরের চেয়ে প্রায় ১০০ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো ধানের চাষ হবে হলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা। রাজশাহী জেলায় এখন পর্যন্ত বোরো ধানের চাষ হয়েছে ১ হাজার হেক্টর।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের লতিফা হেলেন বলেন, রাজশাহীতে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলিসিয়াস। গত কয়েকদিন থেকে রাজশাহীর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমেছে। এছাড়া সন্ধ্যার পরে বাতাস বইলেও রাত থেকে বেলাভর কুয়াশা পড়েছে। সকাল ৯টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। এছাড়া সন্ধ্যা ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ৮৬ শতাংশ।
জেলার উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, বোরোর বীজতলায় কোথাও হলুদ, কোথাও লালচে বর্ণ ধারণ করেছে। আবার অনেক জায়গায় গাছ বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো বীজতলার চারা মারা যেতে শুরু করেছে। তবে কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত বীজতলা সেরে উঠবে। কুয়াশা থেকে রক্ষার জন্য পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, এখনও শীতের কুয়াশার কারণে সেই ভাবে বোরো ধানের বীজ তলা নষ্ট হয়নি। সেইভাবে ক্ষতি হয়নি। তবে আমরা কৃষকদের পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দিচ্ছি। একই সঙ্গে যে কৃষকদের বীজতলার জমিতে পানি জমে আছে সেগুলো নিষ্কাশন করতে হবে। এছাড়া কোনো ধরনের কিটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। তবে আরও কয়েকদিন এমন অবহাওয়া থাকলে বোঝা যাবে আসলে কুয়াশার কারণে কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে।