ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে খুলনার কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই তিন উপজেলার ৯টি জায়গার বাঁধ ভেঙে অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ভেসে গেছে শতাধিক চিংড়ির ঘের, ভেঙে গেছে কয়েকশ’ কাঁচা ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। এ ছাড়া সারারাতের ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া খুলনা নগরীর কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাতে জোয়ারের তীব্র চাপে মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের সিংহেরকোণা, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বেলাল গাজীর বাড়ির সামনের বাঁধ ভেঙে গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, বাঁধের দুর্বল অংশের ওই ৩টি স্থানে প্রায় ১৫০ মিটার ভেঙে নোনা পানিতে প্লাবিত হয়েছে এলাকা। এ ছাড়া বাঁধের নিচু কয়েকটি জায়গায় লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এসব জায়গায় এলাকার মানুষ রাতভর মেরামত কাজ চালিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারেনি।
মহারাজপুরের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, রবিবার রাতের জোয়ারের চাপে ইউনিয়নের দশহালিয়া এলাকায় প্রায় ৫০ মিটার বাঁধ ভেঙে কপোতাক্ষ নদের পানি ঢুকে পড়েছে। এতে অন্তত দুটি গ্রাম ও কয়েকশ’ চিংড়ির ঘের তলিয়ে গেছে।
মহেশ্বরীপুরের ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারি বলেন, ইউনিয়নের সিংহেরকোণা এলাকায় বাঁধ ভেঙে গেছে। এ ছাড়া নয়ানি এলাকার বাঁধের নিচু জায়গা ডুবে সারারাত পানি ঢুকেছে। এতে অন্তত ৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া অসংখ্য চিংড়ির ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ঝড়ের তাণ্ডব ও ভারী বৃষ্টিতে কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে শতাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আমিরুল আজাদ জানান, গত রাত ১০টার পর থেকে খুলনার উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় রিমাল আঘাত হানতে শুরু করে। রাত ১টার পর বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার।
এদিকে খুলনা মহানগরীতে গত রাত ৯টা থেকে বিদ্যুৎ নেই। নগরীর অধিকাংশ এলাকা পানিতে নিমজ্জিত। এখন খুলনা এলাকা দিয়ে থেমে ঝড় বৃষ্টি বয়ে যাচ্ছে।
খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিন জানান, প্রায় এক লাখ মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছে।