চট্টগ্রামে খোলা সয়াবিন তেলের আমদানিকারক থেকে শুরু করে খুচরা পর্যায়ে দাম নির্ধারণ করেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এই দাম নির্ধারণ করা হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমদানিকারকরা ১৫৩ টাকা, ট্রেডার্সে ১৫৫ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে ১৬০ টাকা প্রতি লিটার খোলা তেল বিক্রি করবে, যা আজ (মঙ্গলবার) থেকে কার্যকর হয়ে আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। যেকোনো পর্যায়ে কেউ যদি নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশিতে বিক্রি করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটি।
নির্ধারিত দামের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আবদুস সালাম, টি কে গ্রুপের পরিচালক জাফর আহমেদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচিসহ চেম্বারসমূহের প্রতিনিধি, ভোক্তা সংগঠনের প্রতিনিধি, খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন, ব্যবসায়ী, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও বিশেষ টাক্সফোর্সের সদস্যরা।
এর আগে, গতকাল (সোমবার) বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকটে দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ পরিদর্শনে যান সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন ও জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। পরিদর্শনে গিয়ে ‘ভোজ্যতেল উধাওয়ের’ সত্যতা পেয়ে তেলের উৎপাদনকারী, আমদানিকারক ও আড়তদার ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় মেয়র বলেন, ‘বাংলাদেশের বাইরে যেসব মুসলিম রাষ্ট্র আছে, সেগুলোতে রমজানে সওয়াবের উদ্দেশ্যে ভর্তুকি দেয়। কম মূল্যে তারা পণ্য বিক্রি করে। কিন্তু বাংলাদেশে দেখা যায়, কিছু ব্যবসায়ীর কারণে রাতারাতি পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এই অসাধু ব্যক্তিদের কারণে রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বগতিতে। এ অবস্থায় ভোজ্যতেলকে প্রাধান্য দিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত দামের বাইরে গিয়ে বেশি দামে কেউ বিক্রি করলে সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি চসিক থেকেও বাজার মরিটরিং করা হবে।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, ‘বাজারে ভোজ্যতেলের সংকট চলছে। সেটা কাটিয়ে উঠার জন্য সবার সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, খোলা সয়াবিন তেল খুচরায় সর্বোচ্চ ১৬০ টাকায় বিক্রি করা যাবে। কেউ চাইলে এর চেয়ে কমেও বিক্রি করতে পারবেন, তবে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি নেওয়া যাবে না। এ সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কোনো ব্যবসায়ী যদি খুচরা বা পাইকারি বাজারে বেশি দামে তেল বিক্রি করেন, তাহলে বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটির মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’