২০৪১ সালের মধ্যে দেশের মোট জ্বালানি চাহিদার ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য শক্তি উৎস থেকে নেয়ার যে মহতি প্রত্যয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন তা বাস্তবায়িত করতে জাতীয় বাজেটে নবায়নযোগ্য শক্তি খাত বিকাশের সহায়ক কর প্রস্তাব একান্ত জরুরি। এক্ষেত্রে সৌরশক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাদি আমদানির ওপর যে শুল্ক ও কর আরোপ করা আছে তা বিশেষ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। উচ্চ শুল্ক ও করহারের কারণে সৌরশক্তির পুরো সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
আজ (সোমবার, ২৭ মে ২০২৪) ঢাকায় ‘জাতীয় বাজেটে নবায়নযোগ্য শক্তি খাতের বিকাশ সহায়ক কর প্রস্তাব’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে এই প্রাক-বাজেট সেমিনারে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিআইবিএম-এর ফ্যাকাল্টি সদস্য ও সবুজ অর্থায়ন বিশেষজ্ঞ খন্দকার মোরশেদ মিল্লাত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ এনার্জি-এর পরিচালক ড. নাসিফ শামস, এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নবায়নযোগ্য শক্তি উদ্যোক্তা দীপাল চন্দ্র বড়ুয়া। সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মী এবং দেশের নবায়নযোগ্য শক্তি খাতের বিভিন্ন অংশীজন।
সোলার ইনভার্টার এবং সোলার প্যানেলের মতো যন্ত্রাদির ওপর আরোপিত আমদানি শুল্ক ও করগুলো প্রত্যাহার করা গেলে সৌরশক্তি-নির্ভর সিস্টেমগুলো স্থাপনের ব্যায় ৮ থেকে ১১ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে বলে মত দেন ড. আতিউর। এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় বাজেটে এই শুল্ক ও কর প্রত্যাহার করা বা অন্তত উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমানো গেলে দেশে সৌরশক্তির ব্যবহার বৃদ্ধিতে তা বিশেষ সহায়ক হবে বলে তিনি মনে করেন। রাজস্ব নীতিতে যথাযথ ছাড় না দিলে ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক সেবাদানকারি প্রতিষ্ঠানের সবুজ অর্থায়নের প্রবাহকে নবায়নযোগ্য শক্তির বিকাশে কাজে লাগানো যাবেনা বলে মত ব্যক্ত করেন খন্দকার মোরশেদ মিল্লাত।
ড. নাসিফ শামস বলেন যে, দেশে সৌরশক্তি-সহ বিভিন্ন ধরনের নবায়নযোগ্য শক্তির বাজার তৈরি করার জন্য করছাড় দিয়ে এগুলোকে সহজলভ্য করা দরকার। বাজারে চাহিদা তৈরি হলে উদ্যোক্তারা উৎসাহি হবেন, তখন এমন কি দেশেও বিভিন্ন যন্ত্রাদি তৈরির উদ্যোগ নিতে অনেকে আগ্রহী হবেন বলে তিনি মনে করেন।
অন্যান্য আমদানি পণ্যের সঙ্গে নবায়নযোগ্য শক্তির জন্য দরকারি যন্ত্রাদি আমদানিকে একই চোখে দেখার সুযোগ নেই বলে মত ব্যক্ত করেন দীপাল চন্দ্র বড়ুয়া। তিনি বলেন যে, নবায়নযোগ্য শক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত আমদানি শুল্কে ছাড় দিলে যে সামান্য রাজস্ব আয় হারাতে হবে, নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহারের ফলে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যয় হ্রাস পাওয়ায় তার তুলনায় অনেক বেশি অর্থ সাশ্রয় করা যাবে।