ঢাকাসোমবার , ৯ অক্টোবর ২০২৩

টঙ্গী ৫৪ নং ওয়ার্ডের কৃষকের বাজার ফের চালু

নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ৯, ২০২৩ ১:৪৮ অপরাহ্ণ । ২৩১ জন

ভোক্তাদের নিরাপদ সবজি পৌঁছে দেয়া এবং কৃষকদের পণ্যের সঠিক মূল্যপ্রাপ্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫৪ নং ওয়ার্ডে টঙ্গীর সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি এন্ড কলেজের সামনে পুনরায় চালু করা হলো কৃষকের বাজার। বাজারটি এক বছর আগে উদ্বোধন হলেও কিছু জটিলতার কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এলাকাবাসীর নিরাপদ খাদ্যেও চাহিদা বিবেচনায় বাজারটি আজ পুনরায় ৫৪ নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর আলহাজ বিল্লাল হোসেন মোল্লা চালু করেছেন।

গত শুক্রবার ৬ অক্টোবর ২০২৩ সকাল ৯.০০টায় নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫৪ নং ওয়ার্ডে কৃষকের বাজারটি উদ্বোধন করা হয়।

কৃষকের বাজার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড নং ৫৪ এর কাউন্সিলর আলহাজ্ব মোঃ বিল্লাল হোসেন মোল্লা। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় আয়োজনে আরো বক্তব্য রাখেন গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হাসিবুল হাসান, ভাদুন, পুবাইলের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা শাহীনা সুলতানা, সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মনিরুজ্জামান, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের টিম লিডার পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী। আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন গাজীপুরের ফুড সিস্টেম সিটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ শহীদুল ইসলাম, এলাকাবাসীসহ আরো অনেকে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের টিম লিডার পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো বলেন, ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় কৃষকের বাজার স্থাপনের মাধ্যমে আমরা গ্রাম ও শহরের মধ্যে একটি সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করেছি, যার মাধ্যমে নগরের ভোক্তাগণ নিরাপদ খাদ্য এবং প্রান্তিক কৃষকগণ মুনাফা পাচ্ছেন। ১৬টি কৃষকের বাজারের মাধ্যমে ঢাকার খাদ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন নিশ্চিত করাই আমাদের উদ্দেশ্য। আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগের সাথে এ বাজারগুলো টেকসই করার লক্ষ্যে কাজ করছি।

গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হাসিবুল হাসান বলেন, ইতোপূর্বে একবার টঙ্গীতে ৫৪ নং ওয়ার্ডে কৃষকের বাজার স্থাপন করা হয়েছিলো। কিন্তু একটি সুষ্ঠু সাপ্লাই-চেইনের অভাবে বাজারটি চলমান থাকেনি। এজন্য পুনরায় পুবাইলের ভাদুন থেকে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনকারীদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে বাজারটি চালু করা হয়েছে। প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও বাজার কার্যক্রম চালু রাখার মাধ্যমে নগর খাদ্য ব্যবস্থাপনা উন্নতকরণে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট-এর প্রয়াসকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, বর্তমানে আমাদের শিশু-কিশোররা প্যাকেটজাত খাবারের দিকে ঝুঁকে পড়ছে, যা স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। অন্যদিকে, শাক-সবজিতে কেমিক্যালের উপস্থিতির আশঙ্কায় নগরবাসী শাক-সবজি কেনার ক্ষেত্রে নিরাপদবোধ করেন না। এ অবস্থা পরিবর্তনের জন্য কৃষকের বাজার একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। বাজারটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং এলাকাবাসীর সম্পৃক্ততা প্রয়োজন।

মোঃ বিল্লাল হোসেন মোল্লা বলেন, কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে কৃষকগণ পণ্যের সঠিক মূল্য পায় না। কৃষকের বাজারের মাধ্যমে কৃষক ও ভোক্তা উভয় পক্ষকেই উপকৃত করা সম্ভব। আমি নতুনভাবে এ এলাকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে বাজারটি চলমান রাখতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করা হবে। পরবর্তীতে একটি বাজার কমিটি তৈরি করা হবে, যার মাধ্যমে নিয়মিত বাজারটি তদারকি, পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা করা হবে। আমাদের প্রত্যাশা জনস্বাস্থ্য ও কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে কৃষকের বাজার ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।