টানা বর্ষণে চট্টগ্রাম নগরীর নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী। বৃষ্টির কারণে সড়কে যানবাহন ছিল কম। এছাড়া বৃষ্টিতে পাহাড়ধসের সতর্কবার্তা থাকলেও পাহাড় ছেড়ে কেউ যায়নি আশ্রয়কেন্দ্রে। চট্টগ্রামে বুধবার (৩১ জুলাই) রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সকাল থেকে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বেড়েছে। এতে নগরের বিভিন্ন সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। চট্টগ্রামে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৪৯.৬ মিলিমিটার।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসে থেকে জানা যায়, গত রাত থেকে চট্টগ্রামে অব্যাহতভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। সকাল নয়টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ১১২.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। বেলা ১২ টা পর্যন্ত যা ১৪৯.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকায় মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সর্তক থাকতে বলা হয়েছে।
গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দর সমূহের ওপর দিয়ে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সমুদ্র বন্দর সমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে, ভারী বর্ষণে ইতোমধ্যে শহরের বিভিন্ন নীচু এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। চকবাজার, কাপাসগোলা, বাকলিয়া, বহদ্দারহাট ও আগ্রাবাদের বিভিন্ন এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। এসব এলাকায় অনেক ঘরবাড়ির পাশাপাশি দোকানপাটেও পানি উঠেছে। বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে রাস্তায় বের হওয়া কর্মজীবী মানুষ। এসব এলাকার কোনো কোনো সড়কে কোমর সমান পানি জমেছে।
মো. হাসান নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টি হলেই চট্টগ্রামের সড়কগুলোতে পানি জমে যায়। কোনো কোনো সড়কে রিকশা ছাড়া চলাফেরা করা যায় না। এ কারণে রিকশা ভাড়াও বেড়ে যায়। বছরের পর বছর এ ভোগান্তি যেন শেষ হচ্ছে না আমাদের। অথচ সরকার এ জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করছে।’
নিপুণ আক্তার নামে এক মহিলা বলেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে মেডিকেল যেতে পারছি না। ঘর থেকে বের হয়ে শুধু দেখছি পানি আর পানি। চট্টগ্রামবাসীর এই সমস্যা শেষ হওয়ার নয়।’
জানা গেছে, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে চারটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। ২০১৪ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে শুরু হওয়া এসব প্রকল্পে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।