ঢাকাসোমবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • অন্যান্য

টেকসই নীতি সংস্কার ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির পূর্বশর্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪ ৯:২০ পূর্বাহ্ণ । ১২০ জন
টেকসই নীতি সংস্কার এবং দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনাকে বাংলাদেশের ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির পূর্বশর্ত বলে জানিয়েছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ।

রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ডিসিসিআই আয়োজিত ‘বেসরকারি খাতের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির সামগ্রিক পর্যালোচনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংক-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস)-এর রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মোহাম্মদ ইউনুস, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ এবং পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট (পিআরআই)-এর সিনিয়র ইকোনোমিস্ট ড. আশিকুর রহমান।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, দেশের অর্থনীতিকে ট্রিলিয়ন ডলারের স্মার্ট অর্থনীতিতে পরিণত করতে হলে ব্যবসা পরিচালন ব্যয় হ্রাস, ব্যবসা পরিচালনা সূচকে উন্নয়ন, টেকসই নীতি সংস্কার, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, লজিস্টিক খাতের উন্নয়ন দরকার। সর্বোপরি বেসরকারি খাতে ঋণপ্রাপ্তির সহজলভ্যতা একান্ত অপরিহার্য।

সেমিনারে আশরাফ আহমেদ ২০২৪ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে অর্থনীতির সার্বিক প্রেক্ষাপটের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। মূল প্রবন্ধে তিনি স্থানীয় অর্থনীতিতে বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রভাব, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ, জাতীয় বাজেট ও মুদ্রানীতির বাস্তবায়ন অবস্থা, মুদ্রাস্ফীতি, বেসরকারি বিনিয়োগ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, কৃষি, দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান, সিএমএসএমই, তথ্য-প্রযুক্তি এবং সেবা খাত নিয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, জিডিপিতে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগের অবদান কমে যাওয়াটা উদ্বেগের বিষয় পাশাপাশি স্থানীয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যবসা পরিচালন ব্যয় হ্রাস, সহনীয় মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি প্রাপ্তি, লজিস্টিক খাতের উন্নয়ন জরুরি। এছাড়াও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এর ফলে বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবাহ হ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে, তাই বিষয়গুলোর মধ্যকার সমন্বয় আবশ্যক। এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং বাজার সম্প্রসারণে আমাদের সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি উৎপাদিত কৃষি পণ্যের সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ সুবিধা দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের সম্প্রসারণের উপর জোরারোপ করেন।

সম্প্রতি তৈরি পোশাক খাতে প্রণোদনা সুবিধা প্রত্যাহারের বিষয়ে আশরাফ আহমেদ বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত আগ থেকেই বেসরকারি খাতকে অবহিত করলে, বেসরকারি খাত সে অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। পাশাপাশি চামড়া খাতে দ্রততম সময়ের ইটিপি স্থাপন কার্যক্রম সম্পন্ন, এপিআই পার্কে সকল সেবা নিশ্চিতের মাধ্যমে চালুকরণ, সিএমএসএমই খাতে আর্থয়ন ও প্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষমতা বাড়ানো এবং খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি বিষয়ের ওপর তিনি বিস্তারিত আলোকপাত করেন।

ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, জ্বালানির উচ্চমূল্য প্রদান করলেও শিল্পখাতে আমরা চাহিদামত নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ পাচ্ছি না। এর ফলে পণ্য উৎপাদন সংকোচিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি দিতে না পারলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ সম্প্রসারিত হবে না।

তিনি বলেন, বেসরকারিখাতের উদ্যোক্তাদের জন্য প্রয়োজনীয় টাকার সংস্থান নিশ্চিতকরণের কোনো বিকল্প নেই। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি সুদের হার বাড়িয়েছে সরকার, অন্যদিকে সরকারের প্রয়োজন মেটাতে টাকা ছাপানো হচ্ছে, যা বিপরীতমুখী।

তিনি সিএমএসএমই খাতের সম্প্রসারণে রাজস্ব নীতিমালা সহজীকরণ এবং আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণের ওপর জোর দেন।

সেমিনারে ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলী, পরিচলনা পর্ষদের সদস্যরাসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।