সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে বায়ুদূষণে বিশ্বের শহরগুলোর তালিকায় শীর্ষ তিনে আছে ঢাকার নাম। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে ২১৪ স্কোর নিয়ে ঢাকার বাতাসের মান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের সূচক অনুযায়ী, রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা (পিএম ২.৫)-এর পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ডের চেয়ে প্রায় ২৭.৮ গুণ বেশি রয়েছে। এ সময় ঢাকার মার্কিন দূতাবাস (৫৮৫), ইস্টার্ন হাউজিং (৩৯৮), সাভারের হেমায়েতপুর (৩৯০), মহাখালীর আইসিডিডিআরবি (৩২৪) এই চার এলাকায় বাতাসের মান ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ পর্যায়ে রয়েছে।
এছাড়া গুলশান লেক পার্ক (২৫৮), গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (২১৮), মাদানি এভিনিউ (২১০), কল্যাণপুর (২০৬) এলাকায় বাতাসের মান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে।
বিশ্বের শহরগুলোর তালিকায় আজ শীর্ষস্থানে রয়েছে ভারতের রাজধানীর দিল্লি। ৩৩৬ একিউআই স্কোর নিয়ে শহরটির বাতাসের মান ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ পর্যায়ে রয়েছে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর। ২৬০ স্কোর নিয়ে শহরটিতে খুবই অস্বাস্থ্যকর বাতাস বিরাজ করছে। ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে তালিকায় চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে থাকা মিসরের কায়রো (১৮৪) ও মঙ্গোলিয়ার উলানবাটর (১৮৪)।
একটি শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, তার লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক জানিয়ে থাকে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার।
যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে তখন বায়ুর গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়।
আর সূচক ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এছাড়া ৩০১ এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো-বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণে কারণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।