ঢাকাশনিবার , ২ ডিসেম্বর ২০২৩
  • অন্যান্য

তথ্য সভায় এফএও বাংলাদেশর অগ্রগতি এবং সাফল্য উপস্থাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ২, ২০২৩ ১০:২০ অপরাহ্ণ । ১৬৫ জন

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) সকল সরকারী অংশীদার, রিসোর্স সহযোগী, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং মিডিয়া প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে একটি তথ্যবহুল সভা আয়োজন করে বছরটি শেষ করে। এই সভার উদ্দেশ্য ছিল এফএও বাংলাদেশ এর কাজের অগ্রগতি এবং সাফল্য তুলে ধরা যেখানে মূলত কাউকে পিছনে না ফেলে চারটি মূল স্তম্ভ: উন্নত উৎপাদন, উন্নত পুষ্টি, উন্নত পরিবেশ, উন্নত জীবন অর্জনে এফএও’র প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হয়েছে।

৪৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ এবং এফএও কৃষি, খাদ্য, বনজ, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, গ্রামীণ উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রগুলোর উন্নয়নে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি দেশ এবং পুষ্টি নিরাপত্তা ও খাদ্য রপ্তানির দিকে ক্রমবর্ধমানভাবে অগ্রসর হচ্ছে।

কৃষি খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তর
এফএও’র কৌশলগত কাঠামো ২০২২-৩১ এর লক্ষ্য কৃষিখাদ্য ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহনশীল, এবং টেকসই করার জন্য একসঙ্গে কাজ করা, কাউকে পেছনে না ফেলে উন্নত উৎপাদন, উন্নত পুষ্টি, উন্নত পরিবেশ এবং উন্নত জীবন নিশ্চিতের মাধ্যমে ২০৩০ সালের কর্মসূচিকে সমর্থন করা।

এই তথ্য সভায়, এফএও বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য প্রদান করেন, যার মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে: কৃষি, মৎস্য ও বনায়নে টেকসই উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি; পরিবর্তিত জলবায়ু এবং পরিবেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সহনশীল কৃষি খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা; খাদ্য নিরাপত্তা এবং কমিউনিটির স্বয়ংসম্পূর্ণতা বৃদ্ধি; স্বাস্থ্যকর এবং নিরাপদ খাদ্য সরবরাহের প্রচার; খাদ্য বন্টন উন্নত করা এবং খাদ্যের ক্ষতি ও অপচয় কমানো; স্থলজ এবং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র রক্ষা ও পুনরুদ্ধার; ক্ষুদ্র খাদ্য উৎপাদনকারীদের আয় বৃদ্ধি; কৃষি খাতে সরকারি ব্যয়ের নির্দেশনা; কৃষি জমির উপর মালিকানা অধিকার প্রচার করে জমির মেয়াদ সুরক্ষিত করা; লিঙ্গ সমতার বিকাশ।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন এফএও প্রতিনিধি তার বক্তৃতায় বলেন,“যেহেতু আমরা কাউকে পেছনে না ফেলে উন্নত উৎপাদন, উন্নত পুষ্টি, উন্নত পরিবেশ এবং উন্নত জীবন অর্জনের উদ্দেশ্যে কাজ করি, আমরা আমাদের সকল রিসোর্স সহযোগী, সরকারি অংশীদার, এবং সহকর্মীদের প্রতি তাদের অবিরাম সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”

উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এবং অর্জনের মধ্যে রয়েছে:
– টেকসই কৃষি উৎপাদনের উদ্ভাবনের লক্ষ্যে ১৫টি প্রকল্প বাস্তবায়ন
– গ্রামীণ জলজ কৃষি শক্তিশালীকরণ এবং উপকূলীয় মাছ ধরা কমিউনিটির ক্ষমতায়ন
– দেশব্যাপী বাংলাদেশ এনিম্যাল হেলথ ইন্টেলিজেন্স সিস্টেম (বাহিস) প্রতিষ্ঠা
– স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত জাতীয় গণ কুকুর টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে টেকসই জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ
– ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১ প্রবর্তন, দেশের প্রধান শহরে খাদ্য ব্যবস্থার দূরদর্শিতা এবং দৃশ্যকল্প অর্জন
– ১৩০ টি বাজারে সহায়তা প্রদান, ১৬ টি সাপ্তাহিক কৃষকের বাজার তৈরি, ৬৫০০ শহুরে কৃষিবিদকে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং ইনপুট দিয়ে সহায়তা
– নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও বিপণনকে উৎসাহিত করতে ঢাকায় কৃষকের বাজার তৈরি এবং নিরাপদ সবজি ও ফল উৎপাদনকারীদের বাজারের সাথে যুক্ত করা
– ৮টি বিভাগে ৮টি পুষ্টি-স্মার্ট গ্রাম প্রতিষ্ঠা
– ১৬০০০ হেক্টর জমি জলবায়ু-সহনশীল কৃষি অনুশীলন এবং প্রযুক্তির অধীন করা
– ৮০০ টি কৃষক-মাঠ-বিদ্যালয়ের মাধ্যমে ৩২০০০ জন কৃষককে জলবায়ু-সহনশীল কৃষি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান
– টেকসই উপকূলীয় জলাভূমি ব্যবস্থাপনার জন্য ৭ টি পরিবেশ-বান্ধব চাষাবাদ পদ্ধতি ডিজাইন ও বাস্তবায়ন
– বাংলাদেশ বন তালিকা প্রাতিষ্ঠানিকিকরণ এবং ১০০ জন বন বিভাগের কর্মীকে প্রশিক্ষণ প্রদান
– বাংলাদেশে প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়ন দ্রুত চিহ্নিত করতে এনহ্যান্সড ট্রান্সপারেন্সি ফ্রেমওয়ার্ক (ইটিএফ) রোডম্যাপ প্রস্তুতকরণ
– হাওর অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা মোকাবিলায় অ্যাকশন ট্রিগার এবং প্রটোকল প্রস্তুতকরণ
– মৎস্য খাতে ১০০ জনেরও বেশি সরকারি কর্মকর্তার সক্ষমতা জোরদার
– বহিরাগত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মহিলাদের ঋণের আবেদনের ৮৯% ঋণদাতার মাধ্যমে অনুমোদন প্রদান
– বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৩ টি উপজেলার ৩৩০০০ জন কৃষককে বীজ, সার এবং অন্যান্য উপকরণ দিয়ে চারটি জেলায়: রাঙামাটি, বান্দরবান, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারে সহায়তা প্রদান
– আকস্মিক বন্যার কারণে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে হাওর অঞ্চলের জন্য আগাম অ্যাকশন ট্রিগার প্রস্তুত এবং পরিকল্পনা গ্রহণ
– ৬ টি জেলার ৪৪ টি উপজেলার কৃষকদের কৃষি উপকরণ সহ বীজ দিয়ে সহায়তা প্রদান
– গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ফল আর্মিওয়ার্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য অ্যাকশন প্ল্যান প্রস্তুত করতে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা প্রদান
– কৃষি প্রক্রিয়াকরণের জন্য একটি কৌশলগত পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা প্রদান