কর বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাকের মতো একটি ক্ষতিকর পণ্যের ক্রয়মূল্য ভোক্তার ক্রয়সক্ষমতার উর্দ্ধ্বে নিয়ে যাওয়া জরুরী। এর ফলে তামাকের ব্যবহার রোধ করার পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি করা সম্ভব। যা ২০৪০ সালের পূর্বেই তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় প্রত্যয় বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। উক্ত বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করে আজ ৩০ জুলাই সকাল ১১ টায় ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের উদ্যোগে ‘জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে তামাক কর বৃদ্ধির যৌক্তিকতা’ শীর্ষক জুম ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাফিয়া রহমান, দৈনিক শেয়ারবিজ পত্রিকার চিফ রিপোর্টার রহমত রহমান এবং ব্যুরো অফ ইকোনমিক রিসার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল।
ডা. রাফিয়া রহমান বলেন, তামাক সেবন এবং ধূমপান-সম্পর্কিত অসুস্থতা রোধ করে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। এই ক্ষতিকর দ্রব্য সেবনের ফলে সৃষ্ট রোগের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী আরো গরীব হয়ে যাচ্ছে। যা দেশের সার্বিক স্বাস্থ্যসূচকের অবনতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি করছে। তিনি দেশের তামাক ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ভোক্তাদেরকেও লাইসেন্সিংয়ের অন্তর্ভূক্ত করার সুপারিশ জানান এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক গবেষণার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
হামিদুল ইসলাম হিল্লোল বলেন, প্রচলিত কর কাঠামো, একাধিক মূল্যস্তর এবং নিম্ন ভিত্তিমূল্য তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রধান অন্তরায়। এছাড়া কোম্পানির হস্তক্ষেপের ফলে তামাকজাত দ্রব্যের উপর আশানুরুপ হারে কর বৃদ্ধি পাচ্ছেনা। পরিস্থিতি মোকাবেলায় তিনি তামাক কোম্পানিতে সরকারের বিদ্যমান শেয়ার প্রত্যাহারের পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট কর কাঠামো প্রচলন, কর আদায়ে ডিজিটালাইজড পদ্ধতি প্রনয়ণ, এবং একটি শক্তিশালী তামাক করনীতি প্রনয়ণের দাবি জানান।
রহমত রহমান বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবাজেটে মোড়কে উল্লেখিত মূল্যে তামাকজাত দ্রব্য সরবরাহ করার বিধান যুক্ত করা বর্তমান সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণে আন্তরিকতার প্রমাণ বহণ করে। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে পর্যাপ্ত মনিটরিংয়ের অভাবে খুচরা বিক্রেতারা পূর্বের মতই অতিরিক্ত মূলে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করছে। ফলে একদিকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে অপরদিকে কোম্পানির মুনাফা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই বিষয়ে তিনি বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মীদের প্রমাণনির্ভর তথ্য প্রচারের আহবান জানান। এছাড়াও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের সঠিক তথ্য নিরীক্ষণ, কর আদায় ব্যবস্থা আধুনিকায়ন এবং মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন গবেষণা সংস্থাকে যুক্ত করার সুপারিশ প্রদান করেন।