ঢাকাবুধবার , ৯ অক্টোবর ২০২৪
  • অন্যান্য

তামাক কোম্পানির প্রতি ঘৃণা নিক্ষেপ কর্মসূচী পালন

নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ৯, ২০২৪ ৭:৫৪ অপরাহ্ণ । ৯৮ জন

জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক ব্যবসা থেকে সরকারের অংশীদারিত্ব প্রত্যাহার করা হোক’ শীর্ষক তামাক কোম্পানির প্রতি ঘৃণা নিক্ষেপ কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। আজ ৯ অক্টোবর (বুধবার) শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়। উক্ত কর্মসূচীতে অংশগ্রহণকারীরা তামাক কোম্পানির প্রতি ঘৃণা জানিয়ে তামাক ব্যবসা থেকে সরকারের ন্যূনতম অংশীদারিত্ব প্রত্যাহারের এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে ৯ অক্টোবর জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের দাবী জানান।

বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী এবং প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি জেনারেল হেলাল আহমেদ এর সভাপতিত্বে কর্মসূচীটি সঞ্চালনা করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য।

কর্মসূচিতে বক্তব্য প্রদান করেন এইড ফাউন্ডেশন এর প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা, ডাস্ এর টিম লিড আমিনুল ইসলাম বকুল, ক্যাবের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আহম্মদ একরামুল্লাহ, ভাইটাল স্ট্র্যটেজিসের কারিগরী পরামর্শক আমিনুল ইসলাম, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমান, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (টিসিআরসি) এর প্রজেক্ট ম্যানেজার ফারহানা জামান লিজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরোর প্রজেক্ট অফিসার ইব্রাহীম খলিল, মানস এর সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা আবু রায়হান, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটির পার্টনার্শীপ এ্যান্ড নেটওয়ার্কিং ম্যানেজার মো.আলী আজমান ।

আরো বক্তব্য রাখেন স্মরণী’র (টাঙ্গাইল)নির্বাহী পরিচালক মঞ্জুরাণী প্রামাণিক, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এম এ মান্নান মনির, নবনীতা মহিলা কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক আতিকা হোসেন এবং ফিমেল সাইকেলার্স সিফাত-ই- কানিজ, ডাস’র সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মোয়াজ্জেম হোসেন টিপু, টিসিআরসি এর প্রকল্প কর্মকর্তা জুলহাস আহমেদ, । কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গার্লস গাইড এসোসিয়েশন, নাটাব, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ, আইডিএফ, কসমস (নাটোর), হীল, বিসিসিপি এবং আসুক এর প্রতিনিধিবৃন্দ।

কর্মসূচী থেকে প্রতিকী ঘৃণা স্তম্ভে মৃত্যুর ফেরিওয়ালা তামাক কোম্পানির প্রতি ঘৃনা প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর পন্য উৎপাদনকারী তামাক কোম্পানিতে সরকারের সামান্য (০.৬৪%) অংশীদারিত্ব সার্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টাকে দারুনভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে এখান থেকে অবিলম্বে সরকারের অংশীদারিত্ব প্রত্যাহার করতে হবে। বক্তারা আরো বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন এবং তামাক কোম্পানির উদ্দেশ্য যে কোন উপায়ে মুনাফা অর্জন। তামাক কোম্পানিতে সরকারের সামান্য শেয়ার থাকায় তামাক কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে সরকারের উচ্চপদস্থ তিনজন কর্মকর্তা সরাসরি যুক্ত রয়েছেন। ফলে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং সহায়ক নীতিমালা প্রণয়নে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। শেয়ার থাকার সুযোগ নিয়ে তামাক কোম্পানিগুলো দীর্ঘদিন যাবত নানাভাবে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়ক নীতি প্রণয়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছে। বিগত দিনে কোম্পানিগুলো আইন প্রণয়ন, আইন সংশোধন, কর বৃদ্ধি, মোড়কে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদান এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নেও প্রতিবন্ধকতা সুষ্টি করেছে। উদ্বেগের বিষয় বারবার কর ফাঁকি এবং আইন লংঘনের সাথে সম্পৃক্ত থেকেও তামাক কোম্পানিগুলো ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে বেশকিছু সংস্কার ও ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন ও সার্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীকে গতিশীল করতে হলে তামাক কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। অংশিদারিত্ব অব্যহত রেখে যা কোনভাবেই সম্ভব নয়। বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমরা আশা করছি বর্তমান সরকার ক্ষতিকর পন্য ‍উৎপাদনকারি কোম্পানি থেকে অংশীদারিত্ব প্রত্যাহার করে জনকল্যানে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক স্থাপন করবে।