ঢাকাবুধবার , ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • অন্যান্য

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ৪, ২০২৪ ৪:২০ অপরাহ্ণ । ৭৩ জন

দেশের ৪৮ শতাংশই তরুণ জনগোষ্ঠীকে তামাকের বিষাক্ত ছোবল থেকে বাঁচাতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়েছে ঢাকা আহছানিয়া মিশন।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে আহছানিয়া মিশনের সভাপতি প্রফেসর ড. গোলাম রহমান স্বাক্ষরিত ওই চিঠি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়।

চিঠির মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো তুলে ধরা হয়। বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে এফসিটিসির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত খসড়ায় যে বিষয়গুলো প্রস্তাব করা হয়েছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবগুলো হলো-

সকল পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করা, তামাকজাতদ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সিএসআর কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাতদ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা এবং ই-সিগারেটসহ সকল ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস্ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা।

প্রস্তাবিত এই সংশোধনী গুলো দ্রুত পাস হলে বছরে ১ লক্ষ ৬১ হাজার অর্থাৎ দৈনিক ৪৪২ জন মানুষের প্রাণ রক্ষা হবে।

বাংলাদেশ বিশ্বের ১ম দেশ হিসেবে ২০০৩ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণের আন্তর্জাতিক চুক্তি ডব্লিওএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (WHO FCTC) স্বাক্ষর করে। ২০০৫ সালে এফসিটিসি-এর বাধ্যবাধকতায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা হয়। বিশেষত ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং তামাকপণ্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা নিষিদ্ধকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যথাক্রমে ‘খারাপ’ ও ‘মধ্যম’ স্তরে রয়েছে।

এ ছাড়া সিগারেট ব্যবসায়ীদের নানান রকম অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্ছার হওয়ার আহ্বানও জানায় ঢাকা আহছানিয়া মিশন। তামাক কোম্পানিগুলো তাদের সুবিধার্থে প্রচারণা চালায় যে, সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হলে রাজস্ব কমে যাবে। কিন্তু সঠিক চিত্রটি সম্পূর্ণ বিপরীত। এমন অপপ্রচার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য মতে মোটেও সমর্থন করে না। বাংলাদেশে ২০০৫ সালে যখন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হয়, সে বছর তামাক হতে রাজস্ব ছিলো ২ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা। পরবর্তী অর্থবছর ২০০৫-৬ এ রাজস্ব আদায় হয় ৩ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে যখন আইনটি সংশোধন হয়, সে বছর তামাক থেকে সরকারের রাজস্ব আয় ছিল ১০ হাজার ১৭০ কোটি টাকা।

এছাড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত খসড়া আইন পাশ হলে তরুণদের সুরক্ষার পাশাপাশি অধূমপায়ীদের সুরক্ষা প্রদান ও নতুনদের ধূমপান থেকে নিবৃত্ত করা সহজ হবে। তাই তামাকমুক্ত সুস্থ জাতি গঠনে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক প্রণীত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশের দাবি জানায় ঢাকা আহছানিয়া মিশন।