ঢাকাবুধবার , ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • অন্যান্য

তারুণ্যের উৎসবে পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জনের অঙ্গীকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫ ৬:২২ অপরাহ্ণ । ৮ জন

বাংলাদেশে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্লাস্টিক দূষণের জন্য সবচেয়ে বেশী দায়ী দেশটির তরুণ এবং যুব জনগোষ্ঠী। গবেষণায় বলা হয়েছে, এই তরুণ ও যুব জনগোষ্ঠী একবার ব্যবহার করা হয় এমন সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক পণ্য বেশী ব্যবহার করে। প্লাস্টিক যেহেতু পচনশীল নয়, তাই ব্যবহারের পর যেসব প্লাস্টিক পণ্য ফেলে দেয়া হয়, তার অধিকাংশই যুগের পর যুগ একইভাবে পরিবেশে টিকে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক এন্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এক গবেষণায় বলেছে, চা, কফি, জুস কিংবা কোমল পানীয়র জন্য যেসব প্লাস্টিকের কাপ ব্যবহার করা হয়, সেগুলো ৫০ বছর পর্যন্ত টিকে থাকে।

সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করে প্লাস্টিকের ব্যবহার একেবারে কমিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে আজ ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ সকাল ১১ টায় কাকলী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ এর শিক্ষক তরিকুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় কাকলী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত “পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জন এবং পরিবেশ সুরক্ষায় আমাদের দায়িত্ব¡” শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।

আয়াজনের প্রতিপাদ্য “পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জন এবং পরিবেশ সুরক্ষায় আমাদের দায়িত্ব” বিষয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট্রের সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব। আমাদের মানব জীবন থেকে শুরু করে প্রাণীকূল এবং গোটা পরিবেশের ওপর প্লাস্টিকের যে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে স্কুলের শিক্ষার্থীদের প্লাস্টিক এর ব্যবহার সম্পর্কে উন্মুক্ত আলোচনা করেন।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট্রের হেড অব প্রোগ্রাম, সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, সবার প্রথমে আমাদেরকে জানতে হবে পলিথিন কিংবা প্লাস্টিক আমাদের শরীর ও পরিবেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর। দৈনন্দিন জীবনে এই প্লাস্টিক আমাদের সাথে জড়িয়ে আছে। এই অভ্যস্ততা আমাদেরকেই বদলাতে হবে এবং সেজন্য প্রত্যেককে সচেতন নাগরিক হয়ে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসতে হবে।

প্রধান অতিথি ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট্রের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, পৃথিবীটা আমাদের সকলের। আমাদের নিজের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে প্রথমে আমাদের প্রকৃতি, আমাদের পরিবেশের যত্ন নেয়া প্রয়োজন। বর্তমানে প্লাস্টিকের ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের সাথে তাল মিলিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে দূষণ। প্লাস্টিক ব্যবহারে সবাইকে নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে সরকার এবং বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায় থেকেও আমাদের সবাইকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। তাহলেই আমরা একটি সুস্থ ও সুন্দর দেশ গঠনে সফল হতে পারবো।

কাকলী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মোরশেদা বেগম বলেন, প্লাস্টিক আমাদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় নানান ধরণের কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু বাজার থেকে আরম্ভ করে প্লাস্টিকের তৈরি এমন অনেক উপাদান রয়েছে যার ব্যবহার আমরা একক প্রচেষ্টায় বন্ধ করতে পারবো না। তবে আমরা যদি একটু সচেতন হতে পারি এবং অপরকেও সচেতন করতে পারি তাহলে ধীরে ধীরে প্লাস্টিকের এই ভয়াবহতা অনেকটা কমানো সহজ হবে। প্লাস্টিকের কারণে সমুদ্রে বসবাসকারী প্রাণীর জীবন হুমকির সম্মুখীন হওয়ায় তা সার্বিকভাবে পরিবেশের ক্ষতিসাধনে বড় রকমের প্রভাব ফেলছে। এই অবস্থার অবসান ঘটাতে পলিথিন ও ওয়ান টাইম প্লাস্টিকের তৈরি পণ্যের ব্যবহার কমাতে সরকার হতে গৃহিত পদক্ষেপ বাস্তবায়নের সাথে ব্যক্তি পর্যায় হতেও আমাদেরকে সচেতন হতে হবে। তবেই আমরা আমদের আগামী প্রজন্মকে একটি সুস্থ পৃথিবী উপহার দিতে সক্ষম হবো বলে আমি আশা করি।

পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যবহারের আধিক্য কমিয়ে আনার প্রয়াসকে সামনে রেখে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে প্লাস্টিকমুক্ত পরিবেশ গড়ার অঙ্গীকারবদ্ধ আজকের আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর কর্মকর্তাসহ কাকলী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ এর শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীরা।