দুর্যোগের সময় খাদ্যের চেয়েও তথ্য বেশি প্রয়োজনীয় বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এর কারণ হিসেবে তাদের ব্যাখ্যা, সময়োপযোগী সতর্কতা অসংখ্য জীবন বাঁচাতে পারে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ডিজিটাল ইনোভেশন ইন আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম: বিল্ডিং ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ‘প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) পরিচালক যুগ্ম সচিব মো. আহমাদুল হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সঠিক ও সময়োপযোগী তথ্য বিপর্যয় মোকাবিলার প্রস্তুতির মূল চাবিকাঠি। দুর্যোগকালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তথ্য, ত্রাণ তৎপরতা শুরুর আগেই তা মানুষের কাছে পৌঁছাতে হয়।’ ‘আমাদের কাছে যদি সঠিক তথ্য থাকত তাহলে ১৯৭০ সালে ১০ লাখ প্রাণ বাঁচানো যেত। তথ্য জীবন বাঁচায়, তাই খাদ্যের চেয়ে তথ্যই বেশি প্রয়োজনীয়।’ আপৎকালে স্পষ্ট ও সহজে বোঝা যায় এমন তথ্য প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার ওপর জোর দেন তিনি।
দুর্যোগ মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মনসুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এটি সরকার বা এনজিওগুলোর একার পক্ষে সম্ভব নয়। দুর্যোগ-পরবর্তী পুনর্বাসন প্রক্রিয়া কমাতে আগাম পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়, এনজিও ও অন্যান্য সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় অপরিহার্য।’
এ সময় নদী ভাঙনের পূর্বাভাস পেতে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে বলে জানান বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রবীন কুমার বিশ্বাস। তার মতে, ভূমি ব্যবহার ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলো একীভূত করা গেলে দুর্যোগের সময় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।
প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইশরাত শবনম বলেন, ‘প্রযুক্তি এখন অনেক উন্নতি করেছে। আমরা এখন যে সিস্টেমে আছি তা চাইলে আরও আপগ্রেড করা যেতে পারে। আমাদের বর্তমান প্রচেষ্টা দুর্যোগ মোকাবিলায় একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি বিকাশের দিকে মনোনিবেশ করে এবং এই উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে, যা বর্তমানে মানুষকে সেবা দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরের ধরে আমরা নিজেদের এই যাত্রা অব্যাহত রেখেছি। আমি আশাবাদী যে ভবিষ্যতেও এ ব্যাপারে কাজের সুযোগ প্রসারিত করতে আমরা সক্ষম হব।’
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ প্রকল্প কর্মকর্তা এস এম আশিকুল ইসলাম এবং থিমেটিক লিড ফর ক্লাইমেট অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স অ্যাট প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশনের তামান্না রহমান।