ঢাকাশনিবার , ২৪ জুন ২০২৩
  • অন্যান্য

আজকের সর্বশেষ সবখবর

দূর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় কার্যকর ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির ব্যবহার ও পিপিপি’র সমন্বিত উদ্যোগ জরুরী : ডিসিসিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক:
জুন ২৪, ২০২৩ ১:২৯ অপরাহ্ণ । ২৫৬ জন

বাংলাদেশের জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান প্রায় ৩৬%,এমতাবস্থায় সামগ্রিক অর্থনীতিকে সকল ধরনের দূর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ জরুরী। তথ্য-প্রযুক্তির বর্তমান সময়ে যেকোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকবেলায় নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণের কোন বিকল্প নেই এবং এ ধরনের প্রযুক্তি ও অবকাঠমো নির্মানে বেসরকারিখাতেকে উৎসাহিতকরণে আর্থিক ও নীতিসহায়তা একান্ত অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেন  ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মোঃ সামীর সাত্তার ।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং সুপার প্রজক্টে কনসোরটিয়াম যৌথভাবে আয়োজিত “স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে দূর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বেসরকারিখাতের অংশগ্রহণ” শীর্ষক জাতীয় সিম্পোজিয়ামের উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন ডিসিসিআই সভাপতি । আজ শনিবার রেডিসন হোটেলের বলরুমে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম,উক্ত সিম্পোজিয়ামে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগদান করেন। এছাড়াও এফবিসিসিআই সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন,বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া এবং দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান এ অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই),এ্যাকশনএইড বাংলাদেশ,ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন যৌথভাবে ‘সুপার প্রজক্টে কনসোরটিয়াম’ বাস্তবায়ন করছে,যার সহায়তায় রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইড।  অনুষ্ঠানে “প্রাইভেট সেক্টর ইমারজেন্সী অপরাশেন সেন্টার (পিইওসি)’র ওয়েবসাইট”-এর উদ্বোধন করা হয়, যেখানে দূর্যোগ মোকাবেলায় স্বেচ্চাসেবক দলের তথ্যাদি এবং অগ্নি নির্বাপনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির ব্যবহার ও প্রাপ্তির বিভিন্ন তথ্য সমন্বিত করা হয়েছে।

বিশেষ অতিথি’র ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে প্রায় ৪০০ স্বেচ্ছাসেবক কে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে, যারা যেকোন অনাকাঙিখত দূর্যোগ মোকাবেলায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করবে এবং সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ হতে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মোকাবেলায় প্রশিক্ষণ প্রদান ও ড্রিলের উপর অধিক হারে মনোনিবেশ করা হচ্ছে। তিনি জানান, সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমেই দূর্যোগ মোকাবেলা করা সম্ভব। তিনি আশা প্রকাশ করেন, “প্রাইভেট সেক্টর ইমারজেন্সী অপরাশেন সেন্টার (পিইওসি)’র ওয়েবসাইটি দূর্যোগ বিষয়ক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে তা মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, জনজীবন ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে শিল্প-কারখানা, অফিস-আদালত ও বসত বাড়ি প্রভৃতি ক্ষেত্রে ফায়ার ড্রিল বাস্তবায়ন এবং বিশেষকরে ঢাকা শহরে অনাকাঙ্খিত দূর্যোগ প্রতিরোধ বিদ্যুৎ,পানি সহ অন্যান্য সেবা সংযোগের ম্যাপিং খুবই জরুরী। তিনি বলেন, তৈরি পোষাক খাতের ফ্যাক্টরি সমূহে কমপ্লায়েন্সের বিষয়টিকে প্রাধান্য প্রদান করা হয়েছে,ফলে আন্তর্জাতিক মানের কারখানা বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে এবং অন্যান্য শিল্পখাতেও এ ধরনের উদাহরন অনুসরণ করা প্রয়োজন। এছাড়াও বেসরকারিখাতে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা গ্রহণ কে উৎসাহিতকরণের লক্ষ্যে এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্বল্পসুদে ঋণ প্রদান সহ প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বলেন নিরাপদ ভবন নির্মাণ নিশ্চিতকল্পে বিল্ডিং কোড অনুসরণের আহŸান জানান। তিনি বলেন, জীবনের সাথে ঝুঁকি ওতোপ্রতোভাবে জড়িত, তাই যেকোন ধরনের দূর্যোগ মোকাবেলায় সরকার ও বেসরকারিখাতের সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়নের কোন বিকল্প নেই। বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান আরো বলেন, যেকোন দূর্যোগ মোকাবেলায় তথ্য-প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে থাকে এবং সকল স্তরে এ ধরনের নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিতকরনে সরকারের আর্থিক সহযোগিতা ও নীতি সহয়তা অব্যাহত রাখার উপর জোরারোপ করেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন,বাংলাদেশ ক্রমশই ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দিকে ধাবিত হচেছ এবং সম্ভাবনাময় অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ, তাই শুধুমাত্র ঢাকাতেই নয় বরং সমগ্র বাংলাদেশের ঝুঁকি মোকাবেলায় একটি সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা জরুরী। তিনি আরো বলেন, আমাদের তৈরি পোষাক খাতে বিশ^মানের কমপ্লায়েন্স অনুসরণ করা হচ্ছে এবং শিল্পের অন্যান্য খাতেও এ ধরনের কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জরুরী এবং এর সাথে সম্পৃক্ত সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর আহŸান জানান। সরকার গৃহীত দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠন ও এসোসিয়েশন সমূহকে সম্পৃক্তকরণের পাশাপাশি জনগন ও শিল্পমালিকদের সচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোরারোপ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।

দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান দূর্যোগ ব্যবস্থাপনার দক্ষতা ও সক্ষমতা আনায়নের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন ।

এছাড়াও সিম্পোয়িামে ‘দূর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় ফিন্যান্সিং স্ট্রাটেজি’ এবং দূর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক ২টি প্যারালাল সেশন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে নির্ধারিত আলোচকবৃন্দ বিষয়বস্তুর উপর বিস্তারিত আলোকপাত করেন।সিম্পোজিয়ামে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ঢাকা চেম্বারের উর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান)।