ঢাকামঙ্গলবার , ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • অন্যান্য

পরিবেশ দূষণ নিয়ে যে কোনো অভিযোগ জানানো যাবে ৩৩৩ নম্বরে

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৪ ৬:১৪ অপরাহ্ণ । ১১২ জন
পরিবেশ দূষণের অভিযোগ জানাতে এবং পরিবেশ সম্পর্কিত সেবা পেতে কল সেন্টার ৩৩৩-৪ চালু করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এ কল সেন্টার চালু করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ কল সেন্টারের উদ্বোধন করা হয়েছে।

এসময় অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ৩৩৩-৪ নম্বরে ফোন করে যে কেউ পরিবেশন সংক্রান্ত যে কোনো অভিযোগ ও সেবা নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রথমে ৩৩৩ নম্বরে ফোন দিতে হবে। এরপর পরিবেশ সংক্রান্ত সেবা পেতে ৪ চাপ দিতে হবে।

কল সেন্টারে ফোন করে যে কোনো নাগরিক পানিদূষণ, বায়ুদূষণ, গাছ কাটাসহ পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত যে কোনো অভিযোগ জানাতে পারবেন।

পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ সবকিছুর মূল লক্ষ্য সাধারণ নাগরিক এবং সরকারের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনা।

তিনি বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটা পুকুর ভরাট হয়ে যাচ্ছে বা একটা জলাশয় ভরাট হয়ে যাচ্ছে, ওই ব্যক্তি অভিযোগ কার কাছে করবে? এখন যেটা হচ্ছে (কল সেন্টার চালু) সরাসরি মিনিস্ট্রিতে চলে আসছে। মাঝখানে যে স্তরগুলো ছিল সেগুলো আমরা সরিয়ে দিলাম।

আমরা যতই উন্নয়ন পরিকল্পনা নেই না কেন মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে লিংকগুলো আছে তাদের সক্ষমতা যদি আমরা নিশ্চিত করতে না পারি, আমরা কিন্তু যে জায়গায় পৌঁছাতে চাচ্ছি সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারবো না। সুতরাং এটা বড় একটা কাজ হবে একদিকে আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি অন্যদিকে সাধারণ নাগরিক এবং সরকার…।

‘সরকার কথাটা অনেকে একেবারে ভালোভাবে নেয় না। সরকার মনে হয় অনেক দূরে। সরকার মনে হয় অনেক ঝামেলা। সরকারের কাছে পৌঁছানো যাবে না, মন্ত্রীর কাছে পৌঁছানো যাবে না। এবং আমাদের কাছে অভিযোগগুলো নানা ভাবে আসে। কারো যদি আমার ফোন নম্বর থাকে হোয়াটসঅ্যাপ করে দিচ্ছে বা ভাইবারে পাঠাচ্ছে বা পত্র-পত্রিকায় আপনারা রিপোর্ট করছেন। এখন কিন্তু গুছিয়ে বিষয়টা আমরা এক জায়গায় নিয়ে আসছি’ বলেন সাবের হোসেন চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে একটি স্মার্ট মন্ত্রণালয়ে পরিণত করা তথা এর সার্বিক ডিজিটাল রূপান্তরে সহযোগিতা ও সমন্বয়কে সহজতর করার জন্য এটুআই, আইসিটি বিভাগ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পক্ষে মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং এটুআই-এর পক্ষে প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মামুনুর রশীদ ভূঞা সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

এ বিষয়ে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, এ সমঝোতা স্মারক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে নাগরিকদের অভিযোগ জানানো সুবিধা স্থাপনের পাশাপাশি সরকারি সেবা উন্নত করা, অভ্যন্তরীণ দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নাগরিক সম্পৃক্ততা বাড়ানোর লক্ষ্যে ডিজিটাল উদ্যোগের পরিসরকে বিস্তৃত করবে।

তিনি বলেন, এটুআই প্রোগ্রামের সহযোগিতায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অধীন সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন পরিদর্শন কেন্দ্রে ই-টিকিপটের ব্যবস্থা করা হবে। মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও এর অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য এডিপি ট্র্যাকারের ব্যবস্থা করা হবে। মন্ত্রণালয়ের ইনস্টিটিউশনাল মেমোরি সংরক্ষণ এবং পরিকল্পনা ও নীতি প্রণয়নে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) একীভূত করা হবে। পরিবেশগত মান এবং প্রভাব মূল্যায়নে এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম শক্তিশালীকরণের জন্য ডিজিটাল সমাধান করা হবে। অনলাইন পরিবেশগত ছাড়পত্র সনদ প্রদান এবং প্রক্রিয়া ট্র্যাকিং ব্যবস্থা সহজ করা হবে।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, সমঝোতা স্মারক সইয়ের মাধ্যমে দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা হতে যাচ্ছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় হবে প্রথম স্মার্ট মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন, এখন থেকে নাগরিকরা ৩৩৩ নম্বরে কল করে পরে ৪ চেপে পরিবেশ ছাড়পত্র, গবেষণাগার, বন সংরক্ষণ ইত্যাদি পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও এর অধীন অধিদপ্তরগুলোর তথ্যসেবা ও কর্মকর্তাদের তথ্য পাবেন। পাশাপাশি পানিদূষণ, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, জীববৈচিত্র্য বিনষ্ট এবং অবৈধভাবে বন/পাহাড় ধ্বংস ও গাছ কাটা ইত্যাদি বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন। পরে অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার ড্যাশবোর্ডে পাঠাতে হবে। এরপর কর্মকর্তা অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন এবং সুবিধাভোগীরা এসএমএসের মাধ্যমে আপডেট পাবেন অথবা ৩৩৩-তে কল করেও আপডেট জানতে পারবেন। সরকারি কাজে জনগণকে ডিজিটালি সম্পৃক্ত করে আগামী ৫ বছরে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাইলফলক স্থাপিত হবে।