ঢাকাশনিবার , ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • অন্যান্য

পাবনায় চলছে ১৪৩ অবৈধ ইটভাটা, বিপর্যয়ের মুখে পরিবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪ ৪:২৯ অপরাহ্ণ । ৫ জন

নিয়মনীতি উপেক্ষা করেই পাবনা জেলায় চলছে দেড়শতাধিক ইটভাটার কার্যক্রম। এতে ভয়াবহ হুমকির মুখে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য। পাশাপাশি মাটি জোগান দিতে কাটা হচ্ছে কৃষিজমি। এতে জেলার আবাদি জমিও কমছে। রহস্যজনকভাবে এসব ইটভাটার কার্যক্রম উৎসব আকারে চললেও প্রশাসনের তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই।

জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, পাবনা জেলায় ১৭৩টি ইটভাটার কার্যক্রম চলছে। ৩০টি ইটভাটার পরিবেশের ছাড়পত্র থাকলেও ১৪৩টি ইটভাটা চলছে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে। এরমধ্যে শুধু ঈশ্বরদী উপজেলাতেই ৫৫টি ইটভাটার কার্যক্রম চলছে। ঈশ্বরদীর বেশিরভাগ ইটভাটা লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের কৃষি জমিতে অবস্থিত।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। বিশেষ করে ইটভাটার মাটি কাটার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মোটা অঙ্কের অর্থের লেনদেন হয়। এছাড়াও ইটভাটার মালিকদের বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে বিপুল অর্থের জোগান যায় সংশ্লিষ্ট সব মহলে। ফলে বারবার এইসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে উদ্যোগ নিলেও রহস্যজনকভাবে তা থেমে যায়।

পরিবেশবিদরা বলছেন, যেভাবে ইট পুড়িয়ে পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে তাতে অতি নিকটে আমাদের ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে। বিশেষ পাবনার লক্ষীকুন্ডা, হেমায়েতপুরের অবস্থা ভয়াবহ পর্যায়ে। ভাটার কালো ধোঁয়ায় আশপাশের ঘরবাড়ি, গাছপাড়া, বাগানগুলো নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি কাশি-শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ।

কৃষিজমি উর্বরতা হারাচ্ছে এবং খাদ্য উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে জানিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, পাবনার উপ-পরিচালক ড. মো. জামাল উদ্দীন বলেন, আমাদের আবাদি কৃষি জমি কমছে। একটা ইটভাটার পাশে এখন আরেকটা হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই আবাদি কৃষি জমি নষ্ট হচ্ছে। আমরা এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানিয়েছি। এটা নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যদি কাজ না করে তাহলে আমাদের কিছু করার নেই।

এবিষয়ে তথ্য দিতে কিছুদিন সময় চান পরিবেশ অধিদফতর, পাবনার সহকারী পরিচালক আব্দুল গফুর। তবে পরিদর্শক আব্দুল মমিন বলেন, আমরা জেলা প্রশাসক স্যারের সমন্বয়ে একটা পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমরা খুব শিগগিরই একটা অ্যাকশনে যাব ইনশাআল্লাহ।

নিয়মিত অভিযান চলছে জানিয়ে পাবনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, আমাদের তো লোকবল কম, ১৮ জনের জায়গায় মাত্র ৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট। তারপরও আমাদের অভিযান চলছে, জরিমানা করা হচ্ছে। অন্যান্য ডিপার্টমেন্ট যদি একটু মুভ করতো তাহলে ভালো হতো।