নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ ‘‘স্মার্ট বাংলাদেশ’’ গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আবদুর রহমান। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ-এ কৃষিবিদ দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ এর সভাপতি কৃষিবিদ প্রফেসর ড. মো: শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া এর সভাপতিত্বে কৃষি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মোঃ আব্দুস শহীদ এমপি, কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোহাং সেলিম উদ্দিন ও কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ এর মহাসচিব কৃষিবিদ মো: খায়রুল আলম প্রিন্স অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও মাথাপিছু জমির পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই চাহিদা পূরণে কৃষি বিজ্ঞানীদের নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে অধিক উৎপাদনশীল বীজ, উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ মাছ, মাংস, ডিম, দুধ উৎপাদনে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষ্যে টেকসই উন্নয়নের জন্য মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জেলেদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, মৎস্য ও মৎস্য পন্য রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণ, নিরাপদ মৎস্য উৎপাদন, ইকো-সেনসেটিভ অঞ্চলে মৎস্য অভয়াশ্রম, ইলিশ সম্পদের উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা, সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা বিকাশে সামুদ্রিক মাছের মজুত নিরুপণ ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে আমাদের চাহিদা পূরণ করে মাছ, মাংস বিদেশে রপ্তানী করার বিশাল সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মন্ত্রী বলেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বের মধ্যে একজন সৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে একজন কৃষি বান্ধব প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিহিত করে তাঁর দিক নির্দেশনা অনুযায়ী সবাইকে একসাথে কাজ করার জন্য আহবান জানান।
অভ্যন্তরীণ মুক্ত ও বদ্ধ জলাশয় এবং সামুদ্রিক জলাশয়ের উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনার জন্য সময়োপযোগী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মৎস্যখাতে সরকার কর্তৃক গৃহীত পরিকল্পনা ও উন্নয়ন প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের ফলে মাছের উৎপাদন ঈর্ষণীয় পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে বলে মন্ত্রী মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগী নির্দেশনায় ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুধ ও মাংসের চাহিদা পূরণ এবং উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে যা সেবার মানকে কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সহযোগিতা করবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক প্রতিকূল পরিস্থিতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মাছ, মাংস, ডিম, খাদ্য শস্যের ফলন বাড়াতে কৃষিবিদদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের নিজেদের প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য নিজেদেরই উৎপাদন করতে হবে। ঐতিহ্যগত শস্যের পাশাপাশি নতুন জাতের শস্য উৎপাদন করতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণে তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে গতিশীল উন্নয়ন কৌশল গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে দ্রুত সামনে অগ্রসর হচ্ছে বলে মন্ত্রী এসময় মন্তব্য করেন। তিনি কৃষিবিদদের ঐক্যবদ্ধ থেকে কৃষিক্ষেত্রে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞান ভিত্তিক দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য কৃষিবিদদের প্রতি আহবান জানান।