প্রান্তিক জনগোষ্ঠির চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা সরকারের কাজ বলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ‘আমি চাইনা এ অঞ্চলের রোগী ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নিক, আপনাদের সমস্যাগুলো শুনলাম, এই হাসপাতালে এমআরআই, সিটি স্কিন মেশিন অকেজো। চিকিৎসক ও জনবল সংকট রয়েছে। খুব দ্রত সময়ের মধ্যে এসব সমস্যা সমাধান করা হবে। এবং অনুমোদন ছাড়া কোনো প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিক চালাতে পারবে না। একটি হাসপাতালে যা থাকা দরকার, তা না থাকলে ওইসব বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। আর যদি এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়, সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জন দায়ী থাকবেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
আজ (১৪ জুলাই) রোববার দুপুরে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন একথা বলেন।
দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক থাকেন না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, হাসপাতালে যে চিকিৎসককে যে পদে পদায়ন করা হয়েছে, তাকে অবশ্যই জেলা শহরে থেকে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। এর ব্যতয় হলে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে তিনি এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং ২৫০ শষ্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াবেটিক হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।
অনুমোদনহীন প্রাইভেট ক্লিনিক সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, অনুমোদন ছাড়া কোনো প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিক চালাতে পারবে না। একটি হাসপাতালে যা থাকা দরকার, তা না থাকলে ওইসব বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। আর যদি এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়, সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জন দায়ী থাকবেন।
এছাড়াও, স্বাস্থ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এই জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের সমস্যা নিয়ে তাকে অনেক বিষয়েই অবগত করেছেন। তিনি বলেন, দিনাজপুর জেলার মাটি ও মানুষের সাথে তার আত্মার সম্পর্ক রয়েছে। তিনি এই দিনাজপুর শহরে শৈশব, কৈশোর ও যুবক বয়স অতিবাহিত করেছেন। দিনাজপুর জেলা স্কুল ও তৎকালীন সুরেন্দ্রনাথ কলেজে লেখাপড়া করেছেন। তার অনেক সহযোগী এই জেলায় রয়েছে। তিনি এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন বলেই এই জেলার মানুষের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করবেন বলেও স্থানীয়দের আশ্বস্ত করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাসপাতাল পরিদর্শনকালে চিকিৎসাধীন রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। রাজধানীর বাইরে জেলা ও উপজেলায় অবস্থিত হাসপাতালগুলোর সেবার মান ও সমস্যা দেখতে দিনাজপুরের এই হাসপাতাল পরিদর্শন করছেন বলেও তিনি জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমি বলেছি, সপ্তাহে দু’দিন আমি মন্ত্রণালয়ে অফিস করবো। বাকি দিনগুলো রাজধানীর বাইরের হাসপাতালগুলো পরিদর্শন করে বাস্তব চিত্র তুলে ধরে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো। প্রধানমন্ত্রী আমাকে সম্মতি দিয়েছে, আমি সেই কাজ করছি।’
এদিকে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে জুরিস প্রুডেন্স শিক্ষক নেই জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতাল থেকেই মেডিকেল কলেজের জন্য একজন জুরিস প্রুডেন্সি শিক্ষক নিয়োগ দেন।
দিনাজপুর -৩ আসনের সংসদ সদস্য হুইপ ইকবালুর রহিম, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বুলবুল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার মো. খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক খন্দকার সাজ্জাদ হোসেন, দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ডা. বোরহানুল ইসলাম সিদ্দিকী, দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নুরুজ্জামান, দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. নুরুল্লাহ প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে তিনি রোববার সকালে দিনাজপুর সেন্ট ফ্লিপস স্কুল এন্ড কলেজ ও রামকৃষ্ণ মিশন পরিদর্শন করেন।