প্রাণ বৈচিত্র্য ভরপুর বন তৈরি পদ্ধতি নিয়ে হাতে কলমে শেখার দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করেছে প্রাকৃতিক কৃষি কেন্দ্র। মানিকগঞ্জের প্রাণ বৈচিত্র্য খামারে আগামী ১০ মে ,২০২৪ তারিখে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।
মানুষ কেনো এ কর্মশালা করবে জানতে চাইলে প্রাকৃতিক কৃষির সমন্বয়কারী ও কৃষক দেলোয়ার জাহান বলেন, কর্মশালা করছি। কিন্তু বন তৈরি, বন সৃজন, বন মানে কিন্তু সামাজিক বনায়ন। একটা বন কিভাবে বানাবো। কিভাবে সেখানে পাখি ফিরে আসবে? বন মানে শুধু গাছ না, বন মানে সমস্ত প্রাণ; মাটির মধ্যে মাটির উপরে গাছপালাসহ। পানি, গাছ, ব্যাকটেরিয়া, পাখি এ সমস্ত প্রাণের সম্পর্ক রেখে কিভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে। বনের ইকোসিস্টেম জানার জন্য এটা বোঝা দরকার, এটা শেখার দরকার আছে। গাছ লাগানো তো সহজ আপনি যে কোন একটা গাছ সিলেক্ট করলেন, লাগিয়ে দিলেন। কিন্তু আপনি যখন বন তৈরি করবেন তখন এটার জন্য আপনাকে অনেক ডিটেলস জানতে হবে, ওখানকার ইকোসিস্টেম জানতে হবে। ওখানকার খাদ্যের শৃঙ্খল জানতে হবে, ওখানকার সূর্যের আলো বাতাসের প্রবাহ এ সমস্ত কিছুর সাথে মিলে করতে হয়। ওখানে যে মাটিতে প্রাণ আছে সেগুলোর সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এই কর্মশালায় যেটা করতে চাই সেটা হলো, কেউ যদি মনে করে তার উঠানের পাশে সে একটা ছোট জঙ্গল করবে ১০ ফিট বাই ১০ ফিট হতে পারে, দুই ফিট বাই দুই ফিট হতে পারে। সেই জায়গাটা কিভাবে একটা বনের আদলে ইকোসিস্টেম তৈরি করতে পারবে সেটার আমরা প্রত্যেকটা জিনিস তাদেরকে দেখাবো। আমরা কোথায় অ্যাপ্লাই করছি সেটার রেজাল্ট কী হবে, সেগুলোর অনেক মেথড আছে। ফুড ফরেস্ট মেথড আছে, ফর্মা কালচার আছে। প্রাণের বন সৃজনে কোন ধরনের মেথড আছে সেটার কথা বলব। এর বাইরে বাংলাদেশের গৃহস্থ বাড়ি ব্যাকওয়ার্ড মানে গৃহস্থ বাড়ির পিছনে একটা বন ছিল বা বন থাকতো সেটারও একটা জায়গা আছে সেটা আমরা ব্যাখ্যা করে জানাবো। একটা বাড়ি হলে সে বাড়িতে কিভাবে একটা ছোট বন গড়ে উঠবে, এর বাইরে আমরা গেরিলা বনের কথা বলছি আপনি কিভাবে আপনি চাইলে গেরিলা কায়দায় বন তৈরি করবেন।
এটা কেনো জানা প্রয়োজন জানতে চাইলে দেলোয়ার জাহান বলেন, এটা আসলে জানার বিষয়, শেখার বিষয় সে কারণেই আমরা মনে করছি যে সারা বাংলাদেশে বৃক্ষরোপণ নিয়ে কথা হচ্ছে, গাছ লাগানোর কথা হচ্ছে, তাপমাত্রা নিয়ে কথা হচ্ছে, মানুষ গাছ ও তার নিজের কথা বিবেচনা না করে কাজ করছে। ফলে ইকোসিস্টেমের কথা বিবেচনা করে বন তৈরি করলে তাপমাত্রা নিয়ে আমাদের যে উদ্বেগ সেটা কিছুটা হলেও কমে আসবে। গাছ লাগানো বা এ ধরনের বন সৃজন করলে সর্ব প্রাণের জন্যই কাজে আসবে এইজন্য আমরা এই কর্মশালার আয়োজন করছি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেকটা প্রাচীন গৃহস্থ বাড়িতে একটা করে জঙ্গল থাকতো একটা করে বন থাকতো এবং সেটা তার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কাজে আসতো। তার ওখান থেকে প্রয়োজনীয় কাঠ-বাঁশ আসতো। প্রত্যেকটা প্রাচীন বাড়িতে আপনি এটা দেখতে পাবেন। জরুরি আরেকটি বিষয় হচ্ছে বন মানসিক প্রশান্তি সৃষ্টি করতে পারে। আমরা বলছি আপনি আশ্রয় এবং লালন করবেন, বন তৈরি হয়ে যাবে এবং কোথাও কোথাও মানুষের স্পর্শ ছাড়া এরকম একটা বন তৈরি করা যায়। যেটা ন্যাচারালি হবে মানুষের হাতছাড়া; শুধু মানুষ ঠেকাবে যে এখানে কেউ যেতে পারবে না। যদি চায় প্রাকৃতিক বন তৈরি করতে পারবে, যদি মনে করে যে খাদ্য বন হবে তাহলে খাদ্য বন হবে। যেহেতু বাংলাদেশে জমি কম আমরা শুধু ওয়াইল্ড বনের জন্য করবো না। কিন্তু এমন বন করে তুলব যেখানে বাসস্থান ঠিক রাখবে, মানুষের জন্য খাদ্য উৎপন্ন করবে; সেজন্য আমাদের এই সিলেবাস এর মধ্যে খাদ্য বন আছে, ফুড ফরেস্টের কনসেপ্টে আছে, আমরা সেটাও কর্মশালায় করবো।
কর্মশালার জন্য মানুষের কেমন সাড়া পেয়েছেন জানতে চাইলে দেলোয়ার জাহান বলেন, রেস্পন্স অনেক ভালো। নানা জায়গা থেকে জানাচ্ছে। আমরা এটা পুরো বর্ষা জুড়ে করবো। আমাদের টার্গেট আছে কিভাবে বনের জন্য বৃক্ষরোপণ করতে হয়। অন্যদের কনসেপ্ট খুবই মানুষ কেন্দ্রিক। কোথাও চৈত্র বৈশাখ মাসে ফুলের জন্য শুধু কৃষ্ণচূড়া লাগাচ্ছে মানে শুধু মানুষ কেন্দ্রিক ধারণা। তো সেই জায়গা থেকে একটা পাখির জন্য গাছ লাগাতে হবে। অন্য প্রাণীর জন্য প্রাণ থাকতে হবে, লতানো উদ্ভিদ থাকতে হবে। এগুলো থাকাটাই বাস্তুসংস্থান; ইকো সিস্টেম জরুরি এবং সর্ব প্রাণের জন্য যেটা করতে হবে সেটা হলো শুধু গ্রামে না শহরেও ছোট ছোট জায়গায় ১০ ফিট বাই ১০ ফিট বা পাঁচ ফিট বাই পাঁচ ফিট এরকম জায়গায় কিন্তু এটা করা যায়।
দিনব্যাপী কর্মশালায় অংশগ্রহণ করতে
01718000216 whatsapp( দেলোয়ার জাহান)
0 1815-450554 whatsapp ( ইফতেখার আলী )
আয়োজনে প্রাকৃতিক কৃষি , কাউটিয়া, ঘিওর, মানিকগঞ্জ।
বন তৈরি নিয়ে এক দিনের এই কর্মশালায় বিষয় হিসেবে থাকছে
১, গেরিলা বন
২, গৃহস্থ বন
৩, ঝোপবন
৪ , প্রাকৃতিক বন
৫, খাদ্য বন
৬ , মিওয়াকি ফরেস্ট পদ্ধতি
৭, পার্মাকালচার পদ্ধতি
ঢাকায় যোগাযোগ
প্রাকৃতিক কৃষি বিপণন কেন্দ্র
৩/২৯, শহিদ সলিমুল্লাহ রোড মোহাম্মদপুর ঢাকা
০১৭৬০১৫৫৭৫৩
০১৭৬২৫১১৮০১