আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটসহ সকল তামাকপণ্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে মূল্যবৃদ্ধির জন্য ২৯৬ জন সংসদ সদস্যকে চিঠি দিয়েছেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন (ডাম)-এর সভাপতি কাজী রফিকুল আলম। গতকাল (১১ মে) শনিবার জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত শক্তিশালী বাংলাদেশ গঠনে এ চিঠি দেওয়া হয়।
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত শক্তিশালী বাংলাদেশ গঠনে সম্প্রতি প্রত্যেক সংসদ সদস্যকে আলাদা আলাদা ভাবে দেয়া এই চিঠিতে কাজী রফিকুল আলম বলেন, ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতায় ব্যাপক আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমও ব্যাপকভাবে জোরদার করা হয়েছে।
সরকারের তামাকবিরোধী নানাবিধ কার্যক্রমের ফলে তামাক ব্যবহার ২০০৯ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে ১৮.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। স্বল্প সময়ে তামাকের এই ব্যবহার হ্রাস সরকারের সাফল্যের স্বাক্ষর বহন করলেও বাংলাদেশে এখনও প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক (ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন) ব্যবহার করেন ও ধূমপান না করেও প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বিভিন্ন পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন (গ্যাটস্ ২০১৭)। তামাক ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লক্ষ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করে (ট্যোবাকো এ্যাটলাস, ২০২০)। এছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।
তিনি চিঠিতে উল্লেখ করে বলেন, তামাক ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার জন্য কর বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাক পণ্যরে মূল্য বৃদ্ধি একটি আন্তর্জাতিকভাবে অনুসৃত পদ্ধতি। কিন্তু বাংলাদশের বর্তমান তামাক কর কাঠামো তামাক ব্যবহার কমাতে কার্যকর প্রভাব রাখতে পারছে না।
কাজী রফিকুল আলম তার চিঠিতে আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে তামাক-কর ও দাম বৃদ্ধির জন্য ৩টি প্রস্তাবনা রাখেন। সেগুলো হলো-
১। সকল সিগারেট ব্রান্ডে অভিন্ন করভারসহ (সম্পূরক শুল্ক চূড়ান্ত খুচরা মূল্যের ৬৫%) মূল্যস্তর ভিত্তিক সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ (সম্পূরক) শুল্ক প্রচলন করা অর্থাৎ, প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের নিম্ন স্তরের মূল্য ৬০ টাকা, মধ্যম স্তরের মূল্য ৮০ টাকা, উচ্চ স্তরের মূল্য ১৩০ টাকা এবং প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেটের মূল্য ১৭০ টাকা নির্ধারন করা। অন্যান্য স্তরের মত নিম্ন স্তরের সিগারেটের উপরও ৬৫% সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা।
২। ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫% সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা।
৩। প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার খুচরা ৫৫ টাকা, এবং প্রতি ১০ গ্রাম গুলের খুচরা মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করে ৬০% সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা।
আগামী বাজেট অধিবেশনে তামাকপণ্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে মূল্যবৃদ্ধির জন্য সমর্থন দেয়া ও অর্থমন্ত্রীর প্রতি অফিসিয়াল প্রস্তাবনা পত্র (ডিও লেটার) দেবার জন্য সংসদ সদস্যদের প্রতি আহবান জানান কাজী রফিকুল আলম।