বায়দূষণে বিশ্বের ১২১টি শহরের মধ্যে ৬ষ্ঠ স্থানে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। এ শহরের বাতাসের মান বর্তমানে ‘অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসহ নানা কারণে বিশ্বের বড় বড় শহরে বায়ুদূষণ দিন দিন বাড়ছে। মেগাসিটি ঢাকার বাতাসও দীর্ঘদিন ধরে দূষণের কবলে। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হলে শহরটির বায়ুমানের কিছুটা উন্নতি হয়। তবে বৃষ্টিপাত কমতেই ঢাকার বাতাস হয়ে ওঠে ‘অস্বাস্থ্যকর’।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে দেখা যায়, ১৭০ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ৬ষ্ঠ রয়েছে জনবহুল শহর ঢাকা।
এদিকে, আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্যানুযায়ী, ১২৪ দেশের বায়ুমান পরীক্ষা করছে তারা। এরমধ্যে ঢাকা অবস্থান ৬ষ্ঠ। সবচেয়ে ভালো বায়ু বিরাজ করছে অস্টেলিয়ার সিডনি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন ও অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরাতে। যাদের স্কোর ১৩, ১৩, ও ১৪।
একই সময়ে ২৪৭ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ভিয়েতনামের হ্যানয় এবং ১৯৫ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বসনিয়া হার্জেগোভিনার সারাজেভো। তৃতীয় অবস্থানে ভারতের দিল্লি শহর, যার স্কোর ১৮৬। এ ছাড়া ১৭৬ স্কোর নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর শহর এবং পঞ্চম অবস্থানে থাকাথাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক, যার স্কোর ১৭১। ৬ষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে ঢাকা, স্কোর ১৭০।
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ পর্যন্ত ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ পর্যন্ত স্কোর মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়। আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। অন্যদিকে, স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়। পাশাপাশি ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।
এছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০ এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে। যেমন: বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণে কারণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।