ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০০২ প্রয়োগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ বিধিমালার পাশাপাশি বায়ুদূষণ রোধ নির্দেশিকা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। বায়ুদুষণ রোধ হলে পরিবেশ উন্নতির পাশাপাশি রোগ ও মৃত্যু হ্রাস পাবে। বায়ুদূষণ বিধিমালা বাস্তবায়ন নিশ্চিতে দুষণকারীদের চিহ্নিত এবং আইন অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১১.০০ টায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সাইন্স (বিইউএইচএস) এর ইব্রাহীম অডিটোরিয়াম-
এ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সাইন্স (বিইউএইচএস), সেন্টার ফর ল’ এন্ড পলিসি এফেয়ার্স
(সিএলপিএ), Open Sesame এবং Japan Fund for Global Environment (JFGE) কর্তৃক যৌথভাবে
আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় বায়ুমান উন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এই অভিমত ব্যক্ত
করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর ডা. আনোয়ার হোসেন, ডীন, বিইউএইচএস এবং প্রধান অতিথি
হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ডা. ফরিদুল আলম, ভাইস চ্যান্সেলর, বিইউএইচএস। সভাটি সঞ্চালনা করেন
ডা. তানজিনা আতিক, বিইউএইচএস।
প্রবন্ধ উপস্থাপক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, সেক্রেটারী, সিএলপিএ বলেন, ঢাকা একটি অসাধারণ সুন্দর নগর ছিল আর নগর করার সম্ভব। কিন্তু আমাদের দায়িত্বহীনতার কারণে এ নগর আজ দূষণের শিকার। ঢাকার বায়ুদূষনের অন্যতম প্রধান কারণ নির্মাণ কাজ, যানবাহনের ধোঁয়া, ইটভাট্।া বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, বায়ুদূষণ রোধ নির্দেশিকায় দুষণকারীদের চিহ্নিত, নির্মাণ কাজের হতে দুষণ নিয়ন্ত্রণ, যানবাহনের ধোঁয়া হ্রাস, শিল্প স্থাপনা এবং ইটভাটার ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে সুপষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আর এ সকল নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হলে ঢাকার বায়দূষণ কমে আসবে। তবে এ লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, পরিবেশ অধিদপ্তরকে নেতৃত্ব দিতে হবে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ও পরিবেশ অধিদপ্তরে উচিত আইন অনুসারে প্রকল্পগুলোকে অডিট করা জরুরি।
জনাব প্রফেসর গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, সভাপতি, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি বলেন, ডেল্টা প্লান ও এসডিজি অর্জন করতে হলে ঐক্যবদ্ধভাবে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং সংশ্লিষ্ট আইন কার্যকর করতে হবে।
জনাব বজলুর রহমান তরফদার, সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা ইনটারন্যাশন্যাল ইউনিভার্সিটি-ডিআইইউ বলেন, শুধু ঢাকা নয়, সমগ্র দেশের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে। সরকারী-বেসরকারী সমন্বয়ের মাধ্যমে বায়ুদূষণ হ্রাস করণে কাজ করতে হবে।
ব্যারিষ্টার নিশাত মাহমুদ বলেন, বায়ুদূষণ সংক্রান্তে নাগরিকদের অধিকার আদায়ের জন্য একটা প্লাটফর্ম তৈরী করা প্রয়োজন।
পলাশ চন্দ্র বনিক বলেন, সহকারী অধ্যাপক, বিইউএইচএস নবায়নযোগ্য জ¦ালানীর ব্যবহার বৃদ্ধি করার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। গৃহস্থালীতে বায়ুদূষণ বিষয়ে সচেতন করা অনেক বেশি জরুরী।
সুশান্ত সিনহা, নির্বাহী পরিচালক, আইপিএইচআরসি বলেন, বায়ুদূষণ রোধে মানুষের মনোভাবে ইতিবাচক পরিবর্তন দরকার। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।
অধ্যাপক আ ফ ম সারোয়ার, রিসার্চ কনসালটেন্ট, সিএলপিএ বলেন আমরা যারা বেশিরভাগ সময় ঘরের অভ্যন্তরে থাকি সে কারনে গৃহস্থালির বায়ুর মান উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
কেন কোজাই, সিইও, ওপেন সিসেমি, বলেন জাপানে একসময় খুব বায়ুদূষণ ছিল, কিন্তু জাপান সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও নানামুখী উদ্যগের কারনে বর্তমানে ভালো অবস্থা। বাংলাদেশ জাপানের এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারে।
অধ্যাপক ডা. ফরিদুল আলম, ভাইস চ্যান্সেলর, বিইউএইচএস,বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে গবেষণামূলক কার্যক্রম বাড়াতে হবে এবং প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধের দিকে বেশি নজর দিতে হবে। বাংলাদেশে যে আইন ও নীতিমালা বিদ্যমান রয়েছে সেগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যপক ডা. আনোয়ার হোসেন, ডীন, জনস্বাস্থ্য, বিইউএইচএস বলেন, বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে সংবিধান প্রদÍত অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। নিজেদের সচেতনতা সবার আগে প্রয়োজন, এক্ষেত্রে পাবলিক হেলথ একটিভিস্ট ও কমিউনিটির সম্পৃকতা বাড়াতে হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, সভাপতি, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি; সৈয়দ মাহবুবুল আলম, সেক্রেটারী, সিএলপিএ, অধ্যাপক আ ফ ম সারোয়ার, রিসার্চ কনসালটেন্ট, সিএলপিএ; আমিনুল ইসলাম, কর্মসূচী প্রধান, সিএলপিএ; কেন কোজাই, সিইও, ওপেন সিসেমি, সহযোগী অধ্যাপক জনাব বজলুর রহমান তরফদার, ঢাকা ইনটারন্যাশন্যাল ইউনিভার্সিটি, ডা. মিথিলা ফারুক, বিভাগীয় প্রধান এনসিডি, অধ্যাপক ডা. ফরিদুল আলম, ভাইস চ্যান্সেলর, বিইউএইচএস, ডা. ফরিদুল আলম, ভাইস চ্যান্সেলর, বিইউএইচএস সহ বিইউএইচএস এর বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষথীরাসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।